বরিশাল নগরীতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারী-বহিরাগতরা তাণ্ডব চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবির। তিনি বলেন, ‘তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশে গিয়ে এ তাণ্ডব চালিয়েছে। বরিশালে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের তেমন-একটা সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।’
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকালে বরিশাল শহরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ সব কথা বলেন।
পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবির বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে নাশকতার প্রতিটি ঘটনার চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। শুধু বরিশালে নয়, ঢাকায় দক্ষিণাঞ্চলের কোনো জেলা থেকে কেউ নাশকতা করতে গিয়েছিল কি-না, সেটিও খতিয়ে দেখছে। বিশেষ করে সহিংসতার সময় বরিশালের বিএনপি-জামায়াতের কেউ ঢাকায় ছিল কি-না এবং সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ছিল কি-না; সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘যারা পুলিশের ওপর হামলা করেছে, আর যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে চেয়েছে, তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে।’
গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে বাহিনীর কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে আর্থিক বিষয়টি সামনে এলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
একই বিষয়ে নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. ইলিয়াছ শরীফ। তিনি বলেন, ‘সহিংসতার সময় কারা, কোথায় ছিল; সেটি শনাক্ত করা হচ্ছে। আর ওই সময় কারা ঢাকায় ছিল এবং কারা ফিরে এসেছে, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
নাশকতার সঙ্গে জড়িত নয় এমন ব্যক্তি কিংবা সাধারণ কাউকে হয়রানি করার সুযোগ নেই বলে জানান পুলিশের এ দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সহিংসতার সময় বরিশালের বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ঢাকায় অবস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তদন্তে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এক্ষেত্রে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজসহ প্রযুক্তিনির্ভর তদন্ত করে সহিংসতাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় বরিশালে পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী আহত হন। কয়েকজন লাঞ্ছনার শিকার হন।
গত ১৬ থেকে ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে বরিশালে ঘটা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে পুলিশের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলসহ বেশ কিছু যানবাহন, পুলিশ ফাঁড়ি ও বক্স ভাঙচুর করা হয়। বরিশাল মহানগরসহ রেঞ্জে নাশকতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ মামলায় ৩ হাজারের বেশি মানুষকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে ২৬২ জন।