ঢাকার ধামরাইয়ে আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একটি ফিলিং স্টেশনে ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারীরা।
রোববার (৪ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের কালামপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- জাকারিয়া দিপু, মো: জামিল হোসেন, মানিক মিয়া, সেলিম হোসেন, শাজাহান, কামরুল। তারা সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১০টার দিকে কালামপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে মেসার্স করিম ফিলিং স্টেশনের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। সাড়ে ১০টার দিকে সেখানে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে আসলে তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা পার্শ্ববর্তী পাম্পের ভেতর ঢুকে পড়লে আন্দোলনকারীরা পাম্পে ভাঙচুর চালান।
সরেজমিনে গিয়ে পাম্পের চারটি নজেল, প্রায় শতাধিক প্লাস্টিকের চেয়ার, তিনটি মোটরসাইকেল, একটি প্রাইভেট কার ও একটি তেলবাহী গাড়ি ভাঙচুরের চিত্র দেখা যায়।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দাবি, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে এগিয়ে গেলেও তাদের সঙ্গে থাকা ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়কসহ ধামরাই উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা এ ভাঙচুর চালান।
আহত এক যুবলীগ নেতা বলেন, সকালের দিকে আমরা সেখানে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেই। এসময় একটি মিছিল এসে দুই ভাগ হয়ে যায়, শিক্ষার্থীরা সামনের দিকে চলে যায় আর বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের কর্মীরা এসে আমাদের উপর অতর্কত হামলা চালায়। সেখানে তারা তিন রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে। এছাড়া পাম্পের সিসিটিভি ক্যামেরা, জানালার কাঁচসহ গাড়িও ভাংচুর করা হয়। প্রায় ২৫ মিনিট পর পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে।
ক্ষতিগ্রস্ত পাম্পের মালিক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী এখানে পাম্পের সামনে অবস্থান নেন৷ ওই সময় আন্দোলনকারীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে যাচ্ছিল। মিছিলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কিছু হুমকি দিয়ে কথা বললে আন্দোলনকারীরা তাদের ধাওয়া দেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তখন পাম্পে ঢুকে পড়ে। এ সময় আন্দোলনকারীরা পাম্পে ঢুকে হামলা করে ভাঙচুর চালান। এতে সিসিটিভি ক্যামেরা, দুইটি গাড়ি ও তেলের নজেল ভাঙচুর করা হয়। এতে অন্তত ৩৫-৪০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢুলিভিটা এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা।
সেখানে তারা নিহতদের হত্যার বিচার দাবি ও সরকারের পদত্যাগের দাবি সংবলিত নানা স্লোগান দেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের একাংশ থানা অবরোধের জন্য অগ্রসর হয়ে ধামরাই থানা রোড এলাকায় পুলিশের একটি ব্যানার ভাঙচুর করেন।
পরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের মিছিল আবারও ঢুলিভিটার দিকে নিয়ে যান। সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি শেষ করে বিকেল ৩টার দিকে তারা মহাসড়ক ছেড়ে যায়। এছাড়া সোমবার সকাল ১১টা থেকে একইভাবে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে তারা।