সারা বাংলা

শরীয়তপুরে মিছিলকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল-শিবির হাতাহাতি

শরীয়তপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে ইসলামি ছাত্রশিবির ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হাতাহাতি হয়েছে। 

বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে ধানুকা এলাকায় কলেজ ক্যাম্পাসে হাতাহাতি হয়। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও কলেজ সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের হত্যার নির্দেশদাতা উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচারের দাবিতে দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মী ও কিছু সংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থী। এ সময় তারা মিছিল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে দিতে কলেজের মূলগেট দিয়ে বের হয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আসলে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা তাদের গতিরোধ করে। এ সময় তারা বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কেন নেওয়া হয়নি তা জানতে চায় এবং ছাত্রদলকে সঙ্গে রাখতে বলেন। তবে মিছিলরত শিক্ষার্থীরা তাদের কথা উপেক্ষা করে পুনরায় মিছিল করতে শুরু করলে ছাত্রদল কর্মীরা পুনরায় মিছিল থামিয়ে শেখ লুৎফুর রহমান ভবনের সামনে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও পরে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এ সময় ছাত্রদলের কয়েকজন কর্মী এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে কলেজের সাবেক ছাত্রদল নেতা শাহীন ঢালী ও শিবির নেতা সাখাওয়াতের চেষ্টায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্র অধিকার পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি জীবন আহমেদ বলেন, ‘আমরা সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আজকের মিছিলটি করতে উদ্যোগ নিয়েছিলাম। আমাদের সঙ্গে ছাত্রদলের কর্মীদের থাকতে বলেছিলাম। তারা আমাদের সঙ্গে বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেয়নি। মূলত তারা একাই কলেজে আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। পরে আমরা মিছিল বের করলে ছাত্রদল তাতে বাধা দেয়।’ 

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাখাওয়াত কাউসার বলেন, ‘ছাত্রদল নেতারা পুরো কলেজ একাই নিয়ন্ত্রণ করবে। তাই তারা আমাদের মিছিলে বাধা দিয়েছে। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। পরে আমরা বিক্ষোভ মিছিল স্থগিত করে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে চলে আসি।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ইমরান আল নাজির বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সকল শিক্ষার্থীর প্লাটফর্ম। এতে কোনোভাবে ছাত্রদল বাধা দিতে পারে না। তারা যদি এভাবে বাধা দেয়, তাহলে তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগের তফাৎ রইল না। যদি ছাত্রদল এভাবে একক আধিপত্য ধরে রাখতে চায়, তাহলে বলবো, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সকল শিক্ষার্থী তাদের রুখে দিতে প্রস্তুত আছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজ শাখার সাবেক ছাত্রদল নেতা শাহীন ঢালী বলেন, ‘আজকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের প্রোগ্রামটি করার কথা ছিল। কিন্তু কিছু ছাত্রশিবিরের, কিছু ছাত্র অধিকার পরিষদের ছেলে হঠাৎ করে এসে  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার নিয়ে বের হয়ে পড়ে। যাদের মধ্যে কোনো সমন্বয়ক ছিল না। আমরা তাদের কাছে জানতে চাইলে কথা কাটাকাটি হয়। তবে কোনো সংঘর্ষ হয়নি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বা হাতাহাতি হয়েছে, এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। যদি কেউ অভিযোগ করে, তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’