মাদারীপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত তাওহীদ সন্নামাতকে (১৮) শহিদ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে পরিবার। বুধবার (১৮ আগস্ট) নিহতের বাবা সালাহউদ্দিন সন্নামাত এ দাবি জানান।
নিহত তাওহীদ মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের সুচিয়ারভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, তাওহীদ পড়ালেখার পাশিপাশি পরিবারের স্বচ্ছলতার জন্য কাজ করতেন রাজমিস্ত্রির। গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। সেদিন বিকেলে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তার। রাতেই তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ব্যাসস্ট্যান্ড গোলচত্বরটি তাওহীদের নামে নামকরণ করার দাবি করে বাবা সালাউদ্দিন সন্নামাত বলেন, ‘সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা না পেলে কোনো ভাবেই বেঁচে থাকা সম্ভব নয় আমাদের পক্ষে। ছোট সন্তান হলেও তার আয় করা অর্থ দিয়ে পরিবার চলতো। বড় ভাইয়ের পড়ালেখার খরচ দিতো তাওহীদ। তার মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আমি আমার সন্তানকে শহিদ হিসেবে ঘোষণার জন্য রাষ্ট্রের কাছে আবেদন করছি।’
তাওহীদের মামা ইব্রাহীম খলিল বলেন, ‘তাওহীদ ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে গুলিতে মারা গেছে। এর আগে একদল দুর্বৃত্ত তাওহীদকে কুপিয়ে আহত করে। তাওহীদের নাম এলাকায় একটি স্মরণীয় স্থাপনা নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। যাতে পরবর্তী প্রজন্ম তাওহীদের কথা মনে রাখতে পারে।’
রোমান বেপারী
এদিকে, গত ১৯ জুলাই আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত হন মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি গ্রামের ভদ্রখোলা গ্রামের আমর বেপারীর ছেলে রোমান বেপারী (৩০)। পরিবারের বড় ছেলে ছিলেন তিনি। রোমানের উপার্জনেই চলতো সংসার। রোমান নিহত হওয়ার পর পরিবারে আর্থিক অস্বচ্ছলতা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
স্থানীয়রা জানান, পাঁচ বছর আগে বিয়ে করেন রোমান। তার সংসারে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। মেয়েটি সারাদিন তার বাবার জন্য কান্না করে। আগামী দিনগুলো কীভাবে চলবে তা নিয়ে চিন্তায় থাকেন রোমানের স্ত্রী খাদিজা বেগম।
রোমানের চাচাতো ভাই সোহেল বেপারী বলেন, ‘রোমানের আয় দিয়েই পরিবারটি চলে। রোমান নিহত হওয়ার পর পরিবারটি আর্থিক অস্বচ্ছলতার মধ্যে পড়েছে। আমি সরকোরের প্রতি আহ্বান জানাবো, তারা যেনো রোমানের পরিবারের পাশে দাঁড়ায়। পরিবারটিকে যেনো আর্থিক সহায়তা করা হয়।’
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের পরিবারকে সরকরিভাবে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।