বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আব্দুল্লাহ আল তাহির হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শনিবার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রংপুর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিহত তাহিরের বাবা আব্দুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
শুনানি শেষে মামলাটি গ্রহণ করেন চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক এসএম আহসানুল হক। নিহত আব্দুল্লাহ আল তাহির পেশায় প্রকৌশলী ছিলেন। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আবু সাঈদ হত্যা: সাবেক আইজিপিসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
মামলার অপর আসামিরা হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি মো. আব্দুল বাতেন, সাবেক পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ উত্তম কুমার পাল, এডিসি ক্রাইম উৎপল কুমার রায়, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এ কে এম সায়াদাত হোসেন বকুল, যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী বাবুল, সাবেক নারী সংসদ সদস্য নাসিমা জামান ববিসহ ৪০ জন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই বিকেলে রংপুর নগরী রামমোহন মার্কেটের সামনে ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য আসামিদের নির্দেশে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। গুলিতে আব্দুল্লাহ আল তাহের জখম হন। আব্দুল্লাহ আল তাহির মাটিতে লুটিয়ে পড়লে পুলিশ তাকে ভ্যানে করে নিয়ে যায়। পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আব্দুল্লাহ আল তাহিরের মরদেহ পাওয়া যায়।
মামলার বাদী আব্দুর রহমান বলেন, ‘আজ আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আমি আশা করবো, অতি দ্রুত আসামিদের আইনের আওতায় এনে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করবে সরকার। আমার ছেলে হত্যার ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমরা স্বস্তি পাচ্ছি না।’
বাদী পক্ষের আইনজীবী এএসএম মাহমুদুল হক সেলিম বলেন, ‘আব্দুল আল তাহির হত্যা মামলা আমরা আজ দায়ের করলাম। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দ্রুত আসামিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এমন প্রত্যাশা আমাদের।’
এর আগে, একই আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন আবু সাঈদের পরিবার। এতে সাবেক আইজিপি, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার ও ডিআইজিসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩০/৩৫ জনকে আসামি করা হয়।
এছাড়াও একই দিনে কোটা আন্দোলনে নিহত ব্যবসায়ী মিরাজুল ইসলাম মিরাজ নিহতের ঘটনায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন নিহতের মা আম্বিয়া বেগম।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।