ইটভাটা শ্রমিক রওশনারা হত্যা মামলায় প্রেমিক আলাউদ্দিন গাজীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। রোববার (১৮ আগস্ট) বিশেষ দায়রা জজ ও বিশেষ জজ (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সামছুল হক মামলার রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রপ্ত আলাউদ্দিন গাজী যশোরের কেশবপুর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের শামছুর রহমানের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২২ এপ্রিল কেশবপুরের কাশিমপুর গ্রামের লোকজনের সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ বাঁশ বাগান থেকে অপরিচিত এক নারীর লাশ উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে কেশবপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। পরবর্তীতে মারা যাওয়া নারীকে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বাদুড়িয়া গ্রামের আব্বাস আলীর মেয়ে রওশনারা বলে শনাক্ত করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আব্বাস আলী বাদী হয়ে কেশবপুর থানায় নাম না জানা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্তকালে পুলিশ হত্যা সাথে জড়িত থাকায় ইটভাটা শ্রমিক আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। পরে তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, আলাউদ্দিন গাজী খুলনার বটিয়াঘাটা এলাকার প্রফুল্লর ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন। রওশনারা একই ইটভাটায় কাজ নেন। এরই মধ্যে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রওশনারা তাকে বিয়ে জন্য চাপ দেন। আলাউদ্দিন গাজী তাকে বিয়ে করবেন না বলে জানিয়ে দেন। এরপর থেকে তাদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। রওশনারা প্রায় হুমকি দিতেন তিনি আলাউদ্দিনের বাড়িতে (কেশবপুর উপজেলার কাশিমপুর) যাবেন।
২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল রাতে রওশনারা কেশবপুর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামে আলাউদ্দিনের বাড়ির সামনে আসেন। তিনি মোবাইলে ফোন করে আলাউদ্দিনকে দেখা করতে বলেন। বাড়ি থেকে বের হয়ে রওশনারাকে পাশের আশরাফ শাহজীর বাঁশ বাগানে নিয়ে কথা বলতে থাকেন আলাউদ্দিন। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আলাউদ্দিন রওশনারাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ বাঁশ বাগানে ফেলে পালিয়ে যান।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে একই বছরের ২ সেপ্টম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক শাহজাহান আহমেদ। দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি আলাউদ্দিন গাজীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন বিচারক। সাজাপ্রাপ্ত আলাউদ্দিন গাজী কারাগারে আছেন।