রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা পরিষদের অপসারিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান শেখ হাবিবা সরকারি কোয়ার্টারে থাকার সুবিধা চান। পাশাপাশি দাবি করেছেন, মাসিক সম্মানী ভাতাও। বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি সরকারের কাছে এ দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
নগরীর কাদিরগঞ্জে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন শেখ হাবিবা। তিনি উপজেলা কৃষকলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি প্রথমবারের মতো নারী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
শেখ হাবিবা জানান, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে তিনি ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সাতটি মিথ্যা মামলার আসামি হয়েছেন। সাতবার জেলে গিয়েছেন। এখনো দুটি মামলা বিচারাধীন। তার স্বামী একজন চায়ের দোকানি। ৫ টাকার চা বিক্রির টাকায় তিনি রাজনীতি করেন। এবার নির্বাচনে দল-মত নির্বিশেষে সবাই তাকে ভোট দেন। সর্বোচ্চ ৪২ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। দায়িত্ব নেওয়ার অল্পদিনের মধ্যেই গত সোমবার (১৯ আগস্ট) দেশের সব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে সরকার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার সমর্থন রয়েছে জানিয়ে শেখ হাবিবা বলেন, ‘মোহনপুর থানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিস পুড়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস, ভূমি অফিস ভাঙচুর হয়েছে। আমার ওপর হামলা হয়নি। আমি পালাইনি। কারণ, সবাই আমাকে ভালোবাসেন। নারী ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি উপজেলা সদরে সরকারি কোয়ার্টারে উঠেছি। আমার ছোট মেয়েটাকে মডেল স্কুলে ভর্তি করেছি। এ জন্য আমি এখনো সরকারি কোয়ার্টারে থাকতে চাই। আমাকে এই সুযোগটা দেওয়ার জন্য আমি প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
পদ থেকে অপসারিত হলেও মাসিক সম্মানী ভাতা দেওয়ারও দাবি জানান শেখ হাবিবা। তিনি বলেন, ‘আমি এখনো পড়ালেখা করি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে চতুর্থ বর্ষ চলছে। আমার স্বামী মাসুদ রানা একজন চা দোকানি। চা বিক্রি করে সংসার চালান। আমি সম্মানী ভাতার টাকাটা পেলে সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকতো। আমার কিছুই নেই। আমি সরকারের কাছে এটা চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাবিবার মা ঘাষিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক নারী সদস্য মিনা বেগম উপস্থিত ছিলেন। দুই শিশুকন্যাকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন শেখ হাবিবা।