ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নতুন করে আরও কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। হাওড়া বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। কৃষি জমি ও পুকুর তলিয়ে গেছে। আখাউড়া-আগরতলা সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি উঠছে। স্থলবন্দর এলাকায় পানি উঠায় ইমিগ্রেশন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকালে বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান। এ সময় দুর্গতদের মাঝে শুকনো খাবার, চিড়া, গুড়, ওরস্যালাইন বিতরণ করা হয়। এ সময় সেনাবাহিনী, পুলিশ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) গভীর রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে দিনভর চলে। রাতে কিছু সময় বৃষ্টি বন্ধ থাকে। শেষ রাত থেকে আবারও বৃষ্টি শুরু হয়। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে আসা পাহাড়ি ঢল, বৃষ্টির পানি ও হাওড়া বাঁধ ভেঙে সীমান্তবর্তী উপজেলার দক্ষিণ, মোগড়া ও মনিয়ন্দ ইউনিয়নের বাউতলা, বীরচন্দ্রপুর, কালিকাপুর, বঙ্গেরচর, উমেদপুর, সেনারবাদি, সাহেবনগর, কুসুমবাড়ি, টানোয়াপাড়াসহ অন্তত ৩৫টি গ্রামে কম-বেশি পানি ঢুকেছে। গাজীরবাজার এলাকায় অস্থায়ী সেতু ভেঙে স্থলবন্দরগামী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন বলেন, উপজেলার ৩৫টি গ্রামের ৫২০টি পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয়ের জন্য কয়েকটি প্রাইমারি ও হাইস্কুল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সেতু মেরামতের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগকে খবর দেওয়া হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম জানান, হাওড়া নদী ও গাজীর খালসহ বিভিন্ন স্থানে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে। তা অতিক্রম করলে আরও নতুন করে এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, পাহাড়ি ঢলে ১৯৫ হেক্টর শাকসবজি জমি, ১২২ হেক্টর আমনের বীজতলা, ৩৪৪০ হেক্টর রোপা আমন ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি সরে গেলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা কম। তবে দীর্ঘস্থায়ী হলে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে পারে। এক সপ্তাহ পর ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা পানির কারণে আখাউড়া উপজেলার ১টি পৌরসভা, ৫টি ইউনিয়ন এবং কসবা উপজেলার ১টি ইউনিয়ন বন্যা দেখা দিয়েছে। দুই উপজেলায় প্রায় ১২০০ পরিবার আক্রান্ত হয়েছে। ১৫ মেট্রিক টন চাল ও ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।