সারা বাংলা

দেশে বন্যার জন্য ভারতকে দুষছেন শিক্ষার্থীরা

দেশে আকস্মিক বন্যার জন্য ভারতকেই দুষছেন রাজশাহীর শিক্ষার্থীরা। এর প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ (রাবি) শহরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিক্ষোভ করেছেন। বুধবার (২১ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতেই শিক্ষার্থীরা নগরীর তালাইমারি মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। সমাবেশ থেকে তারা ভারতের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।

পরে বৃহস্পতিবার রাবির প্রধান ফটকের সামনে তারা বিক্ষোভ করেন। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভারতের ডম্বুর ও গজলডোবা বাঁধ খুলে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টির প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে রাজশাহীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা রাবির মূল ফটকের সামনে জড়ো হন। পরে তারা ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে ঘণ্টাব্যাপী এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী-শিক্ষক অংশ নেন।

এ সময় সেখানে ‘তুমি কে আমি কে, আবরার আবরার’, ‘ভারতের আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ভারতের দালালরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আমার দেশ ডুবলে কেন, সরকারের কাছে জবাব চাই’, ‘পেতে চাইলে মুক্তি, ছাড়তে হবে ভারত ভক্তি’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

এ সময় কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মেশকাত চৌধুরী মিশু বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে আন্তর্জাতিক নদীগুলো আছে, তার পানিগুলোর ন্যায্য হিস্যা দিতে হবে। ইতিপূর্বে ফ্যাসিবাদী সরকারের সঙ্গে ভারতের যে অন্যায্য ও গোপন চুক্তিগুলো হয়েছিল তা দ্রুত বাতিল করতে হবে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা না করে কোনো বাঁধ খুলে দেওয়া যাবে না।

রাবির আরবি বিভাগের শিক্ষক ড. ইফতিখারুল আলম মাসুদ বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী কোনো রাষ্ট্রের ভালো সম্পর্ক নেই। উগ্র, ফ্যাসিস্ট, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী সেখানে শাসন করছে। তারা যেভাবে আমাদের শোষণ করেছে তার অন্যতম একটি হলো নদীর পানি শোষণ। আজকে এখানে তরুণ প্রজন্ম দেশ প্রেমের চেতনায় জেগে উঠেছে। কতটা দূরদর্শী ছিল আবরার ফাহাদ। এ ভারত নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করায় তাকে ফ্যাসিস্টদের দোসররা মেরে ফেলেছিল। সন্ত্রাসীরা দেশের প্রতিটা জায়গাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ক্যান্টনমেন্ট বানিয়ে ফেলেছিল। তারা শিক্ষার্থীদের দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে দেয়নি। রাজনৈতিকভাবে ভারত বাংলাদেশেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে তারা এখন পানি নিয়ে খেলা শুরু করেছে।’ 

প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচার সরকার একটা অত্যন্ত দূর্বল পররাষ্ট্রনীতি এবং একইসঙ্গে এই রাষ্ট্রকে ভারতের অলিখিত কলোনীতে পরিণত করেছিল। এ কাজটি তারা করেছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনার সঙ্গে কোনো আধিপত্যবাদ চলে না। কোনো জাতি কখনও আধিপত্যকে মেনে নেওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেনি। ভারত সরকার যদি বাংলাদেশের জনগণের বন্ধু না হয়ে থাকতে চায়, শেখ হাসিনাকে বন্ধু হিসেবে বেছে নেন তাহলে বাংলাদেশর জনতার শত্রুতাকে তাকে বেছে নিতে হবে। ভারতকে ক্ষয় করার আত্মশক্তি আমরা ২০২৪ সালে অর্জন করেছি। এর ফলে ভারত শান্তি পাবে না।’