সারা বাংলা

দর্শনা চেকপোস্টে এমপক্স ঠেকাতে যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা

এমপক্স (মাঙ্কিপক্স) ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্য বিভাগ জরুরিভাবে জেলার দর্শনা আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে বাংলাদেশে ভারত থেকে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করেছে। তবে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত এ সীমান্তে এখনও এমপক্স রোগী শনাক্ত হয়নি। এমপক্স বিষয়ে যাত্রীদের অনেকের ধারণা নেয়।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী মোহাম্মদ শামীম খাঁন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গুটিবসন্তের একই গোত্রীয় ভাইরাস হলেও এমপক্স সাধারণত অনেক কম ক্ষতিকারক। প্রথমে এটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়েছিল। এখন এটি মানুষ থেকে মানুষেও ছড়াচ্ছে। এ রোগে আক্রান্তদের প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথাব্যথা, ফোলা, পিঠে এবং পেশিতে ব্যথা। আক্রান্ত ব্যক্তির একবার জ্বর উঠলে গায়ে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। সাধারণত মুখ থেকে শুরু হয়ে পরে হাতের তালু এবং পায়ের তলদেশসহ শরীরের অন্যান্য অংশে তা ছড়িয়ে পড়ে। অত্যন্ত চুলকানো বা ব্যথাদায়ক এ ফুসকুড়িগুলো পরিবর্তন হয় এবং বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে স্ক্যাব বা গোল গোল পুরু আস্তরে পরিণত হয়ে শেষে পড়ে যায়। এর ফলে দাগ সৃষ্টি হতে পারে।

সংক্রমণের ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে এটি নিজে নিজে ঠিক হয়ে যেতে পারে। তবে ছোট শিশুসহ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর জন্য কিছু ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক। এর আক্রমণের কারণে গুরুতর ক্ষেত্রে মুখ, চোখ এবং যৌনাঙ্গসহ পুরো শরীরে ক্ষত তৈরি হতে পারে।

এ রোগটি সম্প্রতি আফ্রিকা মহাদেশে কঙ্গোসহ বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়েছে। এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সম্প্রতি থাইল্যান্ডে এর সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। 

গত ১৯ আগস্ট থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্টে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশকারী ভারতসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া এমপক্স বিষয়ক জনসচেতনতা বাড়াতে চেকপোস্টে পোস্টার লাগানো হয়েছে। 

স্বাস্থ্য সহকারী মোহাম্মদ শামীম খাঁন জানান, প্রাথমিকভাবে আগত যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা ও শরীরের কোথাও ফোড়া-ফুসকুড়ি আছে কি-না তার পরীক্ষা শেষে তাকে বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া নির্দেশনা রয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তির শরীরে এমপক্সের প্রাথমিক নমুনা শনাক্ত হয়, তাহলে তাকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে ভর্তি করতে হবে।

১৯ আগস্ট থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় যাত্রীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হলেও কারও শরীরে এমপক্স (মাঙ্কিপক্স) শনাক্ত হয়নি।

গত ১ আগস্ট থেকে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার দর্শনা জয়নগর আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট হয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছে ৬ হাজার ৯৮০ হাজার এবং বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছে ৭ হাজার ৯৭০ যাত্রী। 

দর্শনা জয়নগর ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই আতিকুল ইসলাম জানান, এমপক্স শনাক্তে স্বাস্থ্য বিভাগের পাশাপাশি ইমিগ্রেশনের সময় ভারত থেকে বাংলাদেশে আগমনকারীদের পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।