সারা বাংলা

বন্যার পানি কমতেই ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন  

চট্টগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হলেও জেলার মিরসরাই ও ফটিকছড়ি উপজেলার কিছু এলাকার মানুষ এখনও পানিবন্দি রয়েছেন। দুর্গত মানুষের জন্য প্রশাসনিক, সাংগঠনিক এবং ব্যক্তিগতভাবে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা পাওয়া গেলেও পানি নেমে যাওয়ার পর একের পর এক সম্পদের ক্ষতচিহ্ন ভেসে উঠছে।

পানি নেমে যাওয়ায় মিরসরাইয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘরবাড়ি ও রাস্তা-ঘাটের বেহাল দশা ফুটে উঠছে। একচালা টিনের ঘর, মাটির ঘর, সেমিপাকা ঘর, কালভার্ট, গ্রামীণ সড়ক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি জমে থাকায় গোখাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে বিভিন্ন গ্রামে।

ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, এ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় বন্যার পানি এখন আর নেই। পানি সরে যাওয়ায় পর অবকাঠামোগত বিভিন্ন ক্ষতচিহ্ন এখন চোখে পড়ছে। বন্যার্তদের সাথে কথা বলে জানা গেছে সরকারি ও বেসরকারি খাদ্য সহায়তা ছিল যথেষ্ট পরিমাণ। তবে বিভিন্ন ইউনিয়ন এর সাধারণ মানুষের মাটির ঘরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই মুহূর্তে তাদের পুনর্বাসন করা জরুরী হয়ে পরেছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ফটিকছড়ি উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের ৩০ হাজার ২০০ পানিবন্দি পরিবারের এক লাখ ৫০ হাজার মানুষ, মিরসরাইয়ের ১২ ইউনিয়নের ২৫ হাজার পরিবারের এক লাখ মানুষ, সীতাকুন্ডের ৬ ইউনিয়নের ২ হাজার ৭০০ পরিবারের ১২ হাজার মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া হাটহাজারী উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ২০০ পরিবারের ৬০০ মানুষ, বোয়ালখালীর ৩ ইউনিয়নের ১৮০ পরিবারের ১ হাজার ৫০০ মানুষ, বাঁশখালীর ৮ ইউনিয়নের এক হাজার ৭৫০ পরিবারের ৮ হাজার ৭৫০ মানুষ, রাউজানের ৫ ইউনিয়নের ১০৮ পরিবারের ৩ হাজার মানুষ ও সন্দ্বীপের ৩০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে ফটিকছড়ি ও মিরসরাই উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। অধিকাংশ এলাকা থেকেই বন্যার পানি নেমে গেছে। 

চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার জানান, ফটিকছড়ির বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও অনেক এলাকায় এখনও অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। বন্যার্ত মানুষের সহায়তায় উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত আছে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন, সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা আসা অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ থেকে বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ৪৭৫ টন চাল ও ১৮ লাখ টাকা নগদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে বর্তমানে ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হালদা নদী ও মিরসরাই উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ফেনী নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।