গ্রামীণ অবকাঠমো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় রাস্তা সংস্কারের কাজ করেও বিপাকে পড়েছেন মানিকগঞ্জের আটিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রবিউল হাসান। নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ করলেও প্রতিপক্ষ সমর্থকদের উস্কানিতে এলাকার সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। তার দাবি, ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি লাল মিয়া তার বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় এ প্রকল্প নিয়ে ভুল তথ্য ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। তবে, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শ্রমিক লীগ সভাপতি লাল মিয়া।
সরেজমিনে গিয়ে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, কয়েক মাস আগে টিআর প্রকল্পে রাস্তা মেরামতের কাজ করেন ইউপি সদস্য রবিউল হাসান। সম্প্রতি বৃষ্টিতে রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় স্থানীয়দের অনুরোধে নিজের টাকায় এক ট্রাক বালু ফেলেন তিনি। তারা আরও জানান, ইউপি সদস্য আগেও রাস্তার কাজ করেছেন।
গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে এমন বক্তব্য দেওয়ার সময় লাল মিয়ার অনুসারীরা বক্তব্য প্রদানকারী স্থানীয়দের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। লাল মিয়ার অনুসারীদের দাবি, শুধুমাত্র এক ট্রাক বালু ফেলা ছাড়া রাস্তার উন্নয়নে আর কোনো কাজই করেননি ইউপি সদস্য।
ইউপি সদস্য রবিউল হাসান বলেন, প্রকল্পের কাজ নিয়ম অনুযায়ী আগেই শেষ করেছি। স্থানীয়দের অনুরোধে এক ট্রাক বালু ফেলি। কয়েক মাস আগে শুরু হওয়া প্রকল্পের একটি প্রকল্প বিবরণী সম্বলিত সাইনবোর্ড টানানো হয়। এ সুযোগটিই নিয়েছেন ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি লাল মিয়া। তিনি সাধারণ মানুষকে বোঝাচ্ছেন যে, এক ট্রাক বালু ফেলে প্রকল্প শেষ করা হয়েছে। এমন উস্কানিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। আসলে বিষয়টি এমন নয়।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটি নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে। বৃষ্টিতে রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নিজ তহবিলের টাকা খরচ করে এক ট্রাক বালু ফেলেছি। কয়েক মাস আগে প্রকল্পটি শেষ করলেও ব্যস্ততার কারণে সাইনবোর্ড টানানো হয়নি। তাই এবার সাইনবোর্ড টানিয়েছি। এ ঘটনাকে প্রতিপক্ষরা ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। শ্রমিক লীগের সভাপতি লাল মিয়া আমার বিরুদ্ধে নির্বাচনে হেরে প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে এমন বিশৃঙ্খলা করছেন।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলার ফলে রাস্তাটির বেহাল অবস্থা। কয়েক মাস আগে রাস্তা মেরামত করা হয়। ট্রাকসহ ভারি যানবাহন চলাচলের ফলে রাস্তা আবার চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি হলে তো রাস্তাই চলায় যায় না। দ্রুত এ রাস্তাটি পাকা করার দাবি করেন তারা।
ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি লাল মিয়া বলেন, সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকে এমন হয়েছে। রাস্তাটি দুই যুগ ধরে অবহেলিত। কেউ ঠিকমতো চলাচল করতে পারে না। এই কারণে এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে।
এ বিষয়ে আটিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর এ আলম সরকার বলেন, ডিহি কাটিগ্রাম পাকা রাস্তা থেকে আজিজুলের বাড়ির নিকট পর্যন্ত রাস্তা মেরামতের জন্য টিআর কর্মসূচির আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। রাস্তায় মাটি ফেলে সংস্কার কাজও করা হয়। তবে বৃষ্টি হলে পানির ঢলে মাটি সরে যাওয়া এবং ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচলের কারণে রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে। প্রকল্পের শেষ হওয়ার পরেও এখনো সম্পূর্ণ বিল পাননি ইউপি সদস্য। প্রকল্পটির কাজ সঠিকভাবে শেষ হয়েছে। প্রকল্পের শেষে সাইনবোর্ড টানানোর ফলে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে।