বিদ্যুৎখাতে অনিয়মনের কাঠামো ভেঙ্গে ফেলতে চান বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিন বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো পুনর্গঠন করতে চাই। বিদ্যুৎখাতে অনিয়মের কাঠামো ভেঙ্গে দিতে চাই। এ খাতে ঘটা অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হবে। মনে রাখতে হবে, এটা একটি নতুন বাংলাদেশ। এখানে সবার সমান সুযোগ। সংকট যেমন আছে, সমাধানও তেমন আছে।’
শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্টের সম্মেলনকক্ষে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। পরে তিনি পাওয়ার প্ল্যান্টের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এতদিন আমাদের দেশে উন্নয়নের কাহিনী পড়া হচ্ছিল যে, আমাদের মাথাপিছু আয় ও জিডিপি বাড়ছে এবং আমরা নিন্মআয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছি। এখন দেখা যাচ্ছে, এটা একটা ভ্রান্তি। খুলনায় প্রায় আট হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পাওয়ার প্ল্যান্ট হয়েছে, যা জাতীয় জিডিপিতে যুক্ত হয়েছে। জিডিপি বাড়লেও গ্যাসভিত্তিক এ পাওয়ার প্ল্যান্ট সহসা বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তো অনেক আগে থেকে জানতাম বাংলাদেশে গ্যাসের রিজার্ভ কমে যাবে। এখান থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে না। বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে আট হাজার কোটি টাকা খরচ হলো কিন্তু মানুষ এটা থেকে কোনো উপকার পাচ্ছে না। এটাই হলো উন্নয়নের ভ্রান্তি।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘মানুষের জীবনের কী উন্নতি হয়েছে, তা দিয়ে উন্নয়ন পরিমাপ করতে হবে। খুলনার এই পাওয়ার প্লাটের কাছে কেবল ভোলাতে গ্যাস আছে, যা অপর্যাপ্ত। এখানে প্রয়োজন ১৪০ এমএমসিএফ গ্যাস কিন্তু ভোলাতে অতিরিক্ত আছে কেবল একশত এমএমসিএফ গ্যাস। তিন বছর সময় নিয়ে নতুন পাইপলাইন করে এ গ্যাস খুলনায় আনলেও সেটা পর্যাপ্ত হবে না। তবুও এ পাওয়ার প্ল্যান্ট কীভাবে আংশিকভাবে সচল করা যায়, সে বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।’
সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. হাবিবুর রহমান, জালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. নূরুল আলম, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মো. রেজাউল করিম, খুলনার জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. ইউসুপ আলীসহ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন।