বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে নোয়াখালীতে। বানের পানি নামার সঙ্গে এই জেলার আটটি উপজেলায় দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। আশ্রয়কেন্দ্র এবং ঘরবাড়িতে অবস্থান করা মানুষরা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হতে শুরু করেছেন। একসঙ্গে অনেক রোগী আসায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ডায়রিয়ায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই হাসপাতালে প্রায় হাজারেরও বেশি ডায়রিয়া রোগী সেবা নিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ২০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছেন প্রায় তিন শতাধিক রোগী। যাদের বেশিরভাগ শিশু।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে হাসপাতালটির ডায়রিয়া ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, বেড, মেঝে ও করিডরে রোগীরা অবস্থান করছেন। ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে ৯৫ শতাংশই শিশু। জায়গা না হওয়ায় অস্থায়ী ওয়ার্ড খোলা হয়েছে পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনে। সেখানে কোনো শয্যা নেই। মেঝেতে চলছে রোগীদের চিকিৎসা।
নোয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, পানিবাহিত রোগ বাড়ছে। বিশেষ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। আমরা বন্যাকবলিত এলাকায় ২ লাখ ৬০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন সরবরাহ করেছি। চর্মরোগের চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। জেলার বন্যাকবলিত এলাকায় স্বাস্থ্য সেবায় ১২৪টি সরকারি ও ১৬টি বেসরকারি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবাবধায়ক মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, বন্যার যত উন্নতি হচ্ছে, ডায়রিয়া রোগী তত বাড়ছে। বেশির ভাগ রোগী শিশু। হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সের সংকট রয়েছে। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ২০ শয্যার বিপরীতে এখন ভর্তি রয়েছেন প্রায় তিন শতাধিক রোগী। আমরা সাধ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্ট করছি তাদের। হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ডায়রিয়ায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।