কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার জিঞ্জিরাম নদীর ওপর বাঁশের সেতু তৈরি করেছে বিজিবি ও ছাত্র-জনতা। প্রায় ৪৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট প্রস্থের সেতুটি তৈরিতে সময় লেগেছে পাঁচ দিন। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে এই সেতুটি স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ফলে নদী পাড়ের আটটি গ্রামের ২০ হাজার মানুষের মধ্যে ফিরেছে স্বস্তি।
স্থানীয়রা জানান, অনেক বছর আগে গয়টাপাড়া গ্রামের জিঞ্জিরাম নদীর ওপর একটি বাঁশের সাঁকো ছিল। স্থানীয়রা মিলে সাঁকোটি তৈরি করেছিলেন। বন্যার পানির স্রোতে সাঁকোটি ভেঙে যায়। এরপর থেকে এখানে কোনো সেতু বা সাঁকো ছিল না। ফলে বিভিন্ন ধরনের পণ্য নদীর এপার থেকে ওপারে আনা নেওয়া এবং কোমলমতি শিশুদের স্কুলে যাওয়া আসার একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে নৌকা পারাপার ছিল ঝুঁকির কারণ। ফলে আটটি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ছিলেন দুর্ভোগে। দীর্ঘদিন ধরে এই জনপদের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে কেউ এগিয়ে আসেননি। এলাকাবাসী স্থায়ীভাবে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
যাতায়াতে দুর্ভোগ কমাতে জামালপুর ব্যাটালিয়ন-৩৫ বিজিবি অধীনে গয়টাপাড়া বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা এবং ছাত্র-জনতা মিলে নদীর ওপর একটি বাঁশের সেতু নির্মাণ করেছেন। ফলে নদীর এপারের নতুন শৌলমারি, বোয়ালমারী, কলমের চর, চৎলাকান্দা গ্রামের মানুষ সহজেই গয়টাপাড়া, চরেরগ্রাম, চর বোয়ালমারী, বেহুলার চর গ্রামে যাতায়াত করতে পারবেন।
স্থানীয় শিক্ষার্থী লোবান বলেন, ‘মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে বিজিবি ও ছাত্র-জনতার সার্বিক সহযোগিতায় এই সেতু তৈরি করা হয়েছে। এখন এখানকার মানুষদের দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমবে।’
অটোরিকশার চালক মনসুর বলেন, ‘আগে যাত্রীরা নদীর তীরে এসে রিকশা থেকে নেমে নৌকায় করে অপর পাড়ে যেতেন। বাঁশের সেতু নির্মাণ হওয়ায় অটোরিকশায় যাত্রীরা সহজেইে এখন যাতায়াত করতে পারবেন। আমরাও আর্থিকভাবে লাভবান হবো।’
গয়টাপাড়া বিজিবি ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার এবি সিদ্দিক বলেন, ‘জনসেবা মূলক কাজের অংশ হিসাবে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে বাঁশের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।’
রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী মনছুরুল হক বলেন, ‘আপাতত কোনো বরাদ্দ নেই। স্থায়ীভাবে সেতু নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদ হাসান খান বলেন, ‘এলাকাবাসী সেতুর জন্য আবেদন করলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে জানানো হবে।’