সারা বাংলা

দাফনের ৫৪ দিন পর মেরাজুলের মরদেহ উত্তোলন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ফল বিক্রেতা মেরাজুল ইসলাম মেরাজুলের মরদেহ দাফনের ৫৪ দিন পর উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর মহানগরীর নিউ জুম্মাপাড়া কবরস্থান থেকে মরদেহ তোলা হয়। 

মরদেহ উত্তোলনের সময় রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল ইসলামসহ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী ও মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্য ছাড়াও নিহতের পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। 

মরদেহ উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নিহত মেরাজুল ইসলামের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

নিহত মেরাজুল ইসলাম (৩৫) নগরীর জুম্মাপাড়া এলাকার শামসুল হকের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। মেরাজুল নগরীর সিটি বাজার এলাকায় ফল বিক্রি করতেন। তার তিন বছরের ছেলে হানিফ হোসেন এখনো বুঝে উঠতে পারেনি সে চিরতরে বাবার স্নেহ হারিয়েছে। আরেক ছেলে মেহরাব হোসেন নাজিল নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফল বিক্রেতা মেরাজুল ইসলাম নিহতের ঘটনায় দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। গত ২৫ আগস্ট নিহতের স্ত্রী নাজমিম ইসলাম বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

এর আগে গত ১৮ আগস্ট মেরাজুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় তার মা আম্বিয়া বেগম বাদী হয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তা, সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ ২১ জনের নাম উল্লেখ করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালী আমলি আদালতে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

এদিকে নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই শুক্রবার মেরাজুল ইসলামের বিবাহবার্ষিকী ছিলো। সেদিন দুপুরে মুরগি, পোলাওয়ের চাল ও আলু নিয়ে বাড়ি যান। বিকেলে কলার দোকানের মহাজনকে টাকা দিতে মেরাজুল বাড়ি থেকে সিটি বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। বিকেল ৫টার দিকে দোকানের কাছাকাছি পৌঁছালে আন্দোলনকারী ও পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি মারা যান।