বন্যাকবলিত লক্ষ্মীপুর জেলার সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হলেও সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। প্রায় ২৫ দিন ধরে ইউনিয়নের ওয়াপদা বেড়িবাঁধ সড়কের ওপর অস্থায়ী ঘর তুলে বসবাস করছেন তারা।
ভুক্তভোগীদের দাবি, এই অঞ্চলের মানুষ এত পানি আগে কখনো দেখেনি। দীর্ঘমেয়াদি বন্যায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন তারা। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওয়াপদা বেড়িবাঁধের সড়কের ওপর প্রায় দুই শতাধিক পরিবার অস্থায়ীভাবে ঘর তুলে বসবাস করছেন।
বেড়িবাঁধ সড়কের ওপর আশ্রয় নেওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা জানান, প্রায় ২৫ দিন ধরে ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে আছে। প্রথমে টানা বৃষ্টির পানিতে প্রায় দুই ফুট তলিয়ে যায়। এরপর যখন পানি একটু কমতে শুরু করে, তখনই নোয়াখালী থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে ডুবে যায় রাস্তাঘাট, ফসলের ক্ষেত ও বসতঘর। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ভরে যাওয়ায় বেড়িবাঁধের রাস্তাটিই সবার আশ্রয়স্থল হয়ে উঠে। দুই শতাধিক পরিবারের লক্ষাধিক মানুষ এখানে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, বাসিন্দাদের অধিকাংশই কৃষিজীবী। বন্যায় তাদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি কমলেও মানুষজন সহজেই আগের অবস্থানে ফিরে যেতে পারবে না।
জাহাঙ্গীর আলম নামে এক কৃষক বলেন, এখনও কোমরের ওপরে পানি ভেঙে ঘরে ঢুকতে হয়। ঘরের ভেতরে সব কাঁদা হয়ে আছে। চুরির ভয়ে প্রতিদিন দুবার ঘরে যাই। পানির কষ্ট আর সহ্য হয় না। বেড়িবাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে কোনোরকম বেঁচে আছি।
লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ান বলেন, এখনও প্রায় ২ লাখ মানুষ পানিবন্দি ও ৬ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। তবে অধিকাংশ এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে।