ময়মনসিংহ-নেত্রকোণা রুটে চলাচলকারী একটি লোকাল ট্রেনে ডাকাতি হয়েছে। এসময় ডাকাতরা যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মুঠোফোন ও বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৬টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের কেওয়াটখালি এলাকায় ডাকাতির ঘটনাটি হয়। ময়মনসিংহ রেল পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য জানান।
এদিকে, ট্রেন ডাকাতির তথ্য ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও ভুক্তভোগী যাত্রীরা সকাল পৌনে ৮টার দিকে নেত্রকোণার পূর্বধলা স্টেশনে প্রায় এক ঘণ্টার জন্য ট্রেনটি অবরোধ করে রাখেন। পরে উপজেলা নিবাহী অফিসার (ইউএনও) মো. খবিরুল আহসান ও সেনাবাহিনীর ৮ ইস্ট বেঙ্গলের অধিনে পূর্বধলা ক্যাম্পের দায়িত্বরত ওয়ারেন্ট অফিসার মো. শহিদুল উল্লাহ ভূঁইয়া গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া ঝাঞ্জাইল স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত লোকাল ট্রেনটি দিনে চারবার চলাচল করে। ট্রেনটি জারিয়া ট্রেন হিসেবেই পরিচিত। আজ সকাল ৬টার দিকে ট্রেনটি ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন থেকে জারিয়ার দিকে রওনা করে। ময়মনসিংহ নগরের কেওয়াটখালী এলাকায় ট্রেনের গতি কিছুটা কম ছিল। সে সময় ইঞ্জিনের সঙ্গের বগিতে চার জনে ডাকাত ওঠে। তাদের হাতে দেশি অস্ত্র ছিল। ডাকাতরা যাত্রীদের জিম্মি করে মুঠোফোন, নগদ টাকা ও অন্যান্য জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়।
ট্রেন যাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেন চালক ও গার্ডদের যোগসাজশ থাকতে পারে ডাকাতির ঘটনায়।
অভিযুক্ত গার্ড আব্দুল গফুর জানান, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ড্রাইভার তার ইচ্ছেমতো ট্রেন থামিয়েছেন।
অভিযুক্ত ট্রেনের ড্রাইভার আব্দুল হালিম জানান, রেলব্রিজে ওঠার আগে সাধারণত ট্রেনের গতি কিছুটা কমিয়ে দেওয়া হয়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে ডাকাত দল।
পূর্বধলা উপজেলা নিবাহী অফিসার (ইউএনও) মো. খবিরুল আহসান জানান, প্রশাসন ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ময়মনসিংহ রেল পুলিশের ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সকালে ট্রেনটি ছাড়ার আগেই একটি বগিতে ৩/৪ জন উঠেছিল। ট্রেন ছাড়ার পর তারা ছুরি নিয়ে যাত্রীদের ভয় দেখিয়ে তিন থেকে চারটি মোবাইল ও চেইন নিয়ে গেছে। কেওয়াটখালি এলাকায় ট্রেনটির গতি একটু ধীর হলে তারা নেমে যায়। এদের ধরতে ঘটনার পর থেকে অভিযান চালানো হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও এই ট্রেনে ডাকাতি হয়েছিল। ওই ঘটনায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করার পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’