সারা বাংলা

লবলং খাল দখল করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ

ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার খিরু নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে লবলং খাল। এটি তুরাগ নদে গিয়ে মিশেছে। এই খালকে কেন্দ্রে করে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান। তবে, দখল এবং অব্যাহত দূষণে মৃত প্রায় খালটি ভরাট করে ডেকু গ্রুপ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রাস্তা নির্মাণ করার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। 

ডেকু গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খালের পাশের জমি কিনে রাস্তা নির্মাণ করছেন তারা। খাল দখল করা হয়নি। 

জানা গেছে, কয়েক যুগ ধরে ডেকু গার্মেন্টস ও ডেকু ফার্ণিচার নামে দুটি প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে গার্মেন্টসের ঝুট থেকে পলিথিন উৎপাদনের জন্য ইকোভিয়া নামে নতুন একটি কারখানা প্ল্যানিং আছে। ওই কারখানার জন্য লবলং খাল দখল করে রাস্তা নির্মাণ অভিযোগ উঠেছে ডেকু গ্রুপের বিরুদ্ধে।

স্থানীয়রা জানান, নয়নপুর থেকে পশ্চিমের সড়ক ধরে কিছুদুর গেলেই লবলং খালটি চোখে পড়বে। এই খালের ওপর সেতুর দুপাশে লোহার গ্রিল দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রাখা হয়েছে। সেতুর দক্ষিণে খালের পূব পাশেই বালু ভরাট করে রাস্তা নির্মাণের কাজ করছে ডেকু গ্রুপ। পুরো কার্যক্রম তদারকি করছে প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তা প্রহরীরা। খালে নির্দিষ্ট একটি বাদ দিয়ে পূর্ব পাশে প্রায় ১০/১২ ফুট খালের জায়গা দখলের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।  

স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম বলেন, লবলং খাল ভরাট হয়ে গেলে কৃষি জমিতে চাষাবাদ বন্ধ হবে। সৃষ্টি হবে জলাবদ্ধতা। লবলং খাল রক্ষায় সরকারসহ স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করছি। 

অপর বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, ডেকু গ্রুপ অন্যান্য শিল্পের আগ্রাসন থেকে খালকে রক্ষা করতে হবে। কয়েকদিন ধরে খালটি দখলের কার্যক্রম চলছে। এখন পর্যন্ত তাদের থামানোর কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি।

নদী, খাল ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করে নদী পরিব্রাজক দল নামে একটি সংগঠন। সংগঠনের শ্রীপুর শাখার সভাপতি সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘খালটিতে দখলযজ্ঞ চালাচ্ছে ডেকু গ্রুপ। আমরা বরাবরই বলে এসেছি, আইন মেনে সরকারি সার্ভেয়ার দিয়ে খালটি মেপে তাদের কার্যকক্রম পরিচালনা করতে।তারা তাদের মতো করেই খালটি দখল করে যাচ্ছে।’

ডেকু গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার (অপারেশন) তাপস কুমার কুন্ডু বলেন, ‘আমরা খালের পাশের জমি ক্রয় করে রাস্তা নির্মাণ করছি। আমরা লবলং খাল দখল করিনি। বালু ভরাটের সময় ট্রাক উল্টে কিছু বালু খালের মধ্যে চলে গিয়েছিল। আমরা তা সরিয়ে নিয়েছি।’

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজিব আহমেদ বলেন, ‘এবিষয়ে তাদের কাগজপত্র দেখা হচ্ছে। যদি খাল দখলের মতো কোন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’