নড়াইলে গত সপ্তাহের তিন দিনের বৃষ্টিতে জেলার অধিকাংশ মাছের ঘের ভেসে গেছে। একই সঙ্গে রোপা আমন, আউশ ও বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির খেত পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে মৎস্য ও কৃষি খাতে প্রায় ৭০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় ও জেলা মৎস্য অধিদপ্তর।
জানা গেছে, গত সপ্তাহের শনিবার, রোববার ও সোমবারে তিন দিনের ভারী বর্ষণের কারণে নড়াইল সদরের মির্জাপুর, বিছালী, পৌরসভার বাহিরডাঙ্গা, কালিয়া, লোহাগড়ার অধিকাংশ নিচু এলাকার ঘের পানিতে ভেসে গেছে। অনেক ঘের ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।
সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের ঘের ব্যবসায়ী সোহান শেখ বলেন, ‘আমার ১৫ একর জমিতে ১৪টি মাছের ঘের ছিল। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সবগুলো ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। আমার প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
একই গ্রামের আব্বাস কাজী বলেন, ‘আমার ঘেরের সব মাছ বের হয়ে গেছে। ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
কালিয়া উপজেলার ঘের ব্যবসায়ী শামীম আতিক বলেন, ‘আমার দুটি ঘেরে মাছ ছিল। ৫-৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে আমার।
লোহাগড়া উপজেলার আমাদা গ্রামের ঘের ব্যবসায়ী বাবুল শেখ বলেন, ‘আমার ছয়টি ঘের রয়েছে ১০ একর জমির ওপর। একটিতে সাদামাছ, কৈ মাছ, শিংমাছ, তেলাপিয়া মাছের চাষ করা হয়েছিল। বৃষ্টিতে সবগুলো ঘের তলিয়ে রয়েছে। আমার প্রায় ৩০ থেকে ৩২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ২৪ হেক্টর রোপা আমন, ৩ হেক্টর আউশ, ১০ হেক্টর সবজিসহ মোট ৪৮ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আশেক পারভেজ বলেন,গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জেলায় ধান-সবজিসহ ৪৮ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ২ হাজার ২৬০জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কৃষিতে ১ কোটি ৬৬ লাখ ২২ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।’
নড়াইল জেলা মৎস্য অধিদপ্তর উপ-পরিচালক এইচ এম বদরুজ্জামান বলেন, জেলায় বর্ষণে ২ হাজার ৪০০ পুকুর ও ১ হাজার ৫৪৭টি মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এতে ব্যবসায়ীদের ৬৮ কোটি ৮৩ লাখ ১০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ঘের ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেলে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের দেওয়া হবে।