বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি ও গালিগালাজ করা সিরাজগঞ্জের আলোচিত চিকিৎসক রতন কুমার রায়কে পাবনার চাটমোহরে রোগী না দেখতে অনুরোধ জানিয়েছে ছাত্র-জনতা।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পৌর শহরে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে তার কাছে এ অনুরোধ জানান তারা। চিকিৎসক রতন কুমার রায় ছাত্র-জনতার অনুরোধ রাখবেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের সামনে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, বরখাস্ত হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে প্রতি শুক্রবার চাটমোহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে ও ফার্মেসিতে রোগী দেখেন ডাক্তার রতন কুমার রায়। আজ চাটমোহর পৌর শহরে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখছিলেন তিনি। এ সময় চাটমোহরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার সদস্যরা তার চেম্বারে যান। তারা চিকিৎসক রতন কুমার রায়কে বলেন, সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যে আচরণ করেছিলেন তা ছিল অশ্লীল ও অন্যায়। যার ভিডিও সারাদেশে ভাইরাল হয়েছিল। ঘটনাটি বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী এবং দেশবাসীর জন্য ছিল লজ্জাজনক। সেই ঘটনার ন্যায় বিচার এখনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা পায়নি। তাই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার বা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাকে চাটমোহরে কোনো চেম্বারে রোগী না দেখার অনুরোধ জানান।
চিকিৎসক রতন কুমার রায় বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি মানসিক ট্রমাতে ছিলাম। তাই ভুলবশত তেমন আচরণ হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে আমি ঘটনায় লজ্জিত হয়ে পত্রিকায় ব্যাখ্যা বা বিবৃতি দিয়েছি। সেদিনের ঘটনার জন্য আবারও আমি ভুল স্বীকার করছি। যেহেতু চাটমোহরে রোগী না দেখার অনুরোধ করছেন ছাত্র-জনতা, সেহেতু, আমি তাদের কথা রাখবো।'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার পক্ষে রবিউল ইসলাম সুজন বলেন, ‘যেহেতু চিকিৎসক হয়ে আপনি নিজেই মানসিক ট্রমাতে আছেন, আপনি অসুস্থ। আগে আপনি আপনার নিজের চিকিৎসা করান ও সুস্থ হন। তা না হলে আপনার মাধ্যমে মানুষ ভুল চিকিৎসার শিকার হতে পারে।’
প্রসঙ্গত, গত ১১ আগস্ট সিরাজগঞ্জের ২৫ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে কয়েকজন সেবা প্রত্যাশী স্থানীয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কাছে অভিযোগ করেন। পরে আন্দোলনকারী কয়েকজন শিক্ষার্থী ও রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. রতন কুমারের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। একইসঙ্গে হাসপাতালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি চান।
সে সময় সহকর্মীদের সামনে রতন কুমার অভিযোগকারীদের গালিগালাজ করেন এবং তাদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করেন। তার সেই আচরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরদিন শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। গত ১৩ আগস্ট ডা. রতন কুমার রায়কে ওএসডি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সংযুক্ত করার পর বরিশাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে (আইএসটি) দায়িত্ব দেওয়া হয়।