সারা বাংলা

হাইমচরে জলবদ্ধতায় নিঃস্ব পান চাষিরা

দ্রুত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জলবদ্ধতায় চাঁদপুরের হাইমচরে অধিকাংশ স্থানে পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন বহু পান চাষি। 

খাল ও নালাগুলো দখল-দূষণের কারণে পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হচ্ছে বলে জানালেন চাষিরা। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতাসহ যথাযত পদক্ষেপ দেখতে চান তারা।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) হাইমচরের ছোট লক্ষীপুর, কমলাপুর, চরভাঙ্গা গ্রামের কৃষকের পানের বরজের আবাদ পরিদর্শনকালে চাষিরা তাদের এই দুর্দশা তুলে ধরেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বেশ কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় কৃষকের পানের আবাদ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। পানের একটি লতাও জীবিত নেই। সবগুলো পচে শুকিয়ে গেছে। 

স্থানীয় পান চাষি আলী আশরাফ, মিজান পাটোয়ারীসহ শতাধিক চাষি জানান, টানা বৃষ্টির জলাবদ্ধতায় এবং আশপাশের জেলার বন্যার পানি প্রবেশের কারণে অধিকাংশ অঞ্চল পানির তলে ডুবে যায়। এতে করে পানের বরজে অনেক দিন পানি জমে থাকায় পানের লতাগুলো গোড়া থেকে পচে শুকিয়ে গেছে। হাজার হাজার টাকা নষ্ট করেও পানি কমাতে ব্যর্থ হওয়ায় বাঁচানো যায়নি পান বরজের একটি লতাও। তাছাড়া খাল ও নালাগুলো দখল বাণিজ্যের কারণে পানি নামার রাস্তাও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

পানচাষি আজিজ মিয়া বলেন, ‘খাল নালাগুলো দখল হয়ে যাওয়ায় অনেক জায়গা পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। এখনো অনেক অঞ্চলে জলাবদ্ধতায় পান গাছের লতার পাশাপাশি খুঁটি, পইরান, বাঁশ, বাজালি সবগুলো পচে যাচ্ছে। সংরক্ষণ করার জায়গা পাচ্ছি না। পানির নিষ্কাশন ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় পান আবাদে কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে পান চাষে লতার জরুরি প্রয়োজন। এখানে এক পণ লতার দাম সাড়ে ছয় হাজার থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত। পানের লতার এমন অধিক মূল্যে আমরা নতুন করে চাষাবাদ করতে অর্থের যোগান দিতে পারছি না।’

পান বরজের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে চাঁদপুরের হাইমচরের কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাকিল খন্দকার বলেন, ‘হাইমচরে কৃষি খাতে প্রায় ১২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জলাবদ্ধতায় কৃষকের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে। নতুন করে চাষাবাদ শুরু করতে পান চাষিদের পানের লতা প্রয়োজন। হাইমচরে লতার অধিক মূল্য হওয়ায় যশোরের পান চাষিদের সাথে কথা বলেছি। কৃষকের প্রয়োজনে পানের লতার ব্যবস্থা করতে আমরা তৎপর রয়েছি। কৃষি রক্ষায় খাল নালা প্রতিবন্ধকতা মুক্ত করতে আমরা অত্যন্ত আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’