সারা বাংলা

‘ভারতীয় গোয়েন্দা’ গুজবে বিজিবি সদস্য হত্যা, মামলা

গাজীপুরের শ্রীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিজিবি সদস্যদের ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ও দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ বলে গুজব ছড়িয়ে তাদের ওপর হামলা করা হয়। এ ঘটনায় আব্দুল আলিম শেখ নামে এক বিজিবি সদস্য নিহত হন। আহত হন আরো অনেকে। হামলাকারীরা বিজিবি সদস্যদের বহনকারী কয়েকটি গাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় মামলা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর সদর দপ্তরের জেসিও নায়েব সুবেদার সোহেল রানা বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মণ্ডল। 

ওসি বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিজিবি ময়মনসিংহ সেক্টর সদর দপ্তরের জেসিও নায়েব সুবেদার সোহেল রানা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন। অজ্ঞাতনামা আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সকালে ময়মনসিংহ সদর দপ্তর থেকে বিজিবি সদস্যরা দুটি পিকআপ ও দুটি বেসামরিক বাসে গাজীপুরে মোতায়েনের জন্য রওনা হন। পথিমধ্যে ময়মনসিংহের ভালুকায় বিজিবি গাড়ি বাধার মুখে পড়ে। দুটি স্থানে স্থানীয় জনতাদের বুঝিয়ে গন্তব্যে রওনা হন। শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার উড়াল সেতুর কাছাকাছি পৌঁছালে বড় বাধার মুখে পড়েন। এ সময় হাজারো জনতা বিজিবি বহনকারী বাস দুটি আটক করে স্থানীয় একটি পেট্রোল পাম্পে নিয়ে যায়। এরপর জনতা বাসের চাকার হাওয়া ছেড়ে দেয়।

পরবর্তীতে বিজিবি সদস্যদের ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্য বলে গুজব ছড়িয়ে তাদের ওপর হামলা করা হয়। লোকজন বিজিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। খবর পেয়ে দুপুর ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার বিজিবির সদস্যদের উদ্ধার করতে আসে। হামলাকারীরা হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সেনাবাহিনীর দুই জন ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে এলে তাদের ওপর হামলা করা হয়। সেনাবাহিনী ও বিজিবির উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে থেকে বিজিবি সদস্যদের কৌশলে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার সময় মাওনা চৌরাস্তা এলাকা থেকে গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি পর্যন্ত হামলা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকান বিক্ষুব্ধ জনতা।

এ সময় কয়েকজন বিজিবি সদস্য স্থানীয় একটি মসজিদে গিয়ে আশ্রয় নিলে সেখানেও তাদের ওপর হামলা হয়। কয়েকজন আহত হন। অনেকেই মসজিদের জানালার গ্লাস ভেঙে খালি গায়ে পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন। এ সময় নায়েক আব্দুল আলিম শেখ নামে এক বিজিবি সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হামলাকারীরা বিজিবির একটি জিপ, ছয়টি পিকআপ, তিনটি ট্রাক, একটি ম্যাজিস্ট্রেট বহনকারী পিকআপ ও দুটি বাস ভাঙচুর করে আগুনে জ্বালিয়ে দেয়।