হবিগঞ্জে বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ৩ লাখ ৭৬ হাজার টন রোপা আমন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে জেলার ৯টি উপজেলায় রোপা আমনের আবাদ শেষের দিকে। জমিতে সার প্রয়োগ ও আগাছা পরিষ্কারের কাজ শুরু হবে কয়েকদিনের মধ্যেই। আগামী ধাপগুলোতে ধান গাছের কোনো ক্ষতি না হলে কৃষকরা ভালো ফলনের আশা করছেন।
চলতি মৌসুমে হবিগঞ্জে রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৮ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমির চারা রোপণ করা হয়েছে। বাকি জমিতে কয়েকদিনের মধ্যেই চারা রোপণ শেষ হওয়ার কথা।
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য, সাম্প্রতিক বন্যায় জেলার ৯ উপজেলায় ৩ হাজার ১৮৬ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত এসব জমির বেশিরভাগে দ্বিতীয় দফায় রোপা আমনের চারা রোপণ করা হয়েছে। তারপরও ৯ হাজার ৪৮৫ টন চাল উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার পিরিজিপুর গ্রামের বেশিরভাগ কৃষক জমিতে চারা রোপণের কাজ শেষ করেছেন। তারা এখন জমিতে সার প্রয়োগ ও আগাছা পরিষ্কারে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
পিরিজিপুর গ্রামের হাওরে ৩০ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ করা ওয়ারিশ মিয়া জানান, জুলাইয়ে বন্যার প্রভাবে আবাদের সময় সপ্তাহখানেক পিছিয়েছে। তারপরও দ্রুতগতিতে আবাদ হওয়ায় ধান উৎপাদনে বড় রকম নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা না।
বানিয়াচং উপজেলায় হেঙ্গু মিয়াপাড়ার মোতাহের হোসেন ১৫ বিঘা জমিতে রোপা আমন আবাদ করেছেন। বন্যায় তার ৫ বিঘা জমি তলিয়ে গিয়েছিল। পরে তিনি দ্বিতীয় দফায় জমিতে চারা রোপণ করেন।
মোতাহের হোসেন জানান, এলাকায় চারা না থাকায় দ্বিতীয় দফায় রোপণের জন্য বাইরে থেকে ধানের চারা কিনে আনতে হয়েছে। ফলে খরচ বেড়েছে, উৎপাদন কিছুটা কমবে। তিনি এখন বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছেন। তারপর সার প্রয়োগ ও আগাছা পরিষ্কারে নামবেন।
হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ৮৮ হাজার ৩২০ হেক্টর জমি থেকে ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৬৩৯ টন ধান উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। চালের হিসেবে গেলে তা হবে ২ লাখ ৫১ হাজার ৯৩ টন।