চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে পানিতে নিমাঞ্চলের আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। একইসঙ্গে জেলার কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পরীসংখ্যান অনুযায়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঙ্খা পয়েন্টে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত পদ্মা নদীতে ২১ দশমিক ১৫ মিটার পনির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে। বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ২২ দশমিক ০৫ মিটার। পদ্মায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার মহানন্দা ও পূণর্ভবা নদীতেও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পদ্মা তীরবর্তী মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত পাঁচ দিন ধরে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে খুব দ্রুত। নিম্নাঞ্চলে কৃষকের আবাদি জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ফলে মাষকলাই, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ও আখসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। কৃষকরা বলছেন- কিছুদিন আগেই অধিকাংশ চাষি জমিতে মাষকলাই বীজ রোপণ করেছেন তারা। হঠাৎ নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের জমি ডুবে গেছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে জেলাজুড়ে ১ হাজার ৩৬৪ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। এরমধ্যে চাঁইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ২১২ ও শিবগঞ্জ উপজেলায় ১ হাজার ১৫২ হেক্টর জমি পানিতে তলিয় গেছে। নিমাঞ্চলের এসব আবাদি জমিতে মাষকলাই, ধান, সবজি, আখ ও তিলসহ অনান্য ফসল চাষ হচ্ছে।
এদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর এলাকার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ক্লাস বন্ধ থাকা নারায়ণপুর দারুল হোদা আলিম মাদাসার সুপারিনটেনডেন্ট শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে মাদরাসার ক্লাসরুমগুলোয় পানি ঢুকেছে। সেজন্য গতকাল রোববার থেকে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এই মাদরাসায় সাড়ে ৪০০জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।’
আবাদি জমি পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আনিসুল হক বলেন, ‘এখন অনেক জমিতে কৃষকরা মাষকলাইয়ের বীজ বুনেছেন। মাঠপর্যায়ের হিসেব অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি পানিতে আক্রান্ত হয়েছে মাষকলাই জমি। অনান্য ফসলি জমিও ডুবেছে কিন্তু সেগুলো পরিমাণে খুবই কম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আশা করা যাচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে পানি কমে গেলে, কৃষকরা অনেক রিকভারি করতে পারবেন। তারপরেও আমরা কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তাদের সবধরণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
জেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা এখনো কিছু জানি না। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যপ্রদানকারী কর্মকর্তা আবু সোয়েব বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীতে পানি বাড়ছে। জেলার নিমাঞ্চলের আবাদি জমিগুলো পানিতে ডুবে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, কয়েকদিনের মধ্যে পানি কমে যাবে।’