মৌলভীবাজারের রাজনগর কাউয়াদীঘি হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মনু প্রকল্পের কাশিমপুর পাম্প হাউজের থ্রি-ব্যান্ড নালাতে অবৈধভাবে মাছ ধরছে একটি চক্র বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশসন থেকে জায়গাটি ইজরা না দেওয়ার পরও তারা সেখানে মাছ ধরছেন। ফলে বোরো খেত প্রস্তুত ও চলতি মৌসুমে মাছ উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, চক্রটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, মৌলভীবাজার জেলায় প্রাকৃতিকভাবে মাছ উৎপাদনের অন্যতম উৎস কাউয়াদীঘি হাওর। ধানচাষ ও মাছ উৎপাদনের জন্য ১৯৮৩ সালে হাওর ঘেরা বাঁধ নির্মাণে প্রকল্পটি চালু হয়। এখানে হাওরের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের জন্য রয়েছে পাম্প হাউস। পাশে রয়েছে কুশিয়ারা নদী। বর্ষা মৌসুমে নদী থেকে মা মাছ হাওরে প্রবেশ করে। সে জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে সিক্স ব্যন্ড ও থ্রি ব্যান্ডের নালা। একটি চক্র সুযোগ বুঝে ইজারার অজুহাত দেখিয়ে সেখান থেকে অবৈধভাবে মাছ ধরছে। এতে নদী ও হাওরে মাছের যাতায়াত পথ রোধ ও মাছের প্রজনন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। জাল ফেলে রাখার কারণে হাওরের পানি নিষ্কাশন ব্যহত হয়। প্রভাব খাটিয়ে একটি মহল এই কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তারা।
ফতেপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য চয়েজ আলীর বলেন, ‘অধিক মুনাফার আশায় একটি চক্র অবৈধভাবে ওই স্থানে মাছ শিকার করে। এতে প্রকল্পের ক্ষতি হচ্ছে।’
একই এলাকার আশরাফ আলী বলেন, ‘চলতি মৌসুমে অতি বৃষ্টির কারণে হাওরে এখনো পানি জমে রয়েছে। প্রায় তিন হাজার মানুষ পানিবন্দি। জাল ফেলার কারণে হাওর থেকে দ্রুত পানি নামতে পারছে না। পানি না কমার প্রভাব পড়বে বোরো চাষাবাদে।’
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘একটি চক্র জাল ফেলে অবৈধভাবে মাছ ধরছে। আমরা এখানে কোনো খাল ইজারা দেইনি। উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্টরা জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন।’
রাজনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রাভাত চাকমা বলেন, ‘আমরা অবৈধ জাল তুলে নেওয়ার কথা বলেছি। তারা কথা না শুনলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলেন, ‘আমরা কাউকে ইজারা দেইনি। যারা এই কাজ করছেন তারা অবৈধভাবে করছেন। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাদের বিরুদ্ধে।’