সারা বাংলা

স্থানীয়দের আন্তরিকতায় ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা 

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় রেলওয়ে শ্রমিকদের অসাবধানতার ফলে ট্রেনের বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। অতিরিক্ত তাপে রেললাইনের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দেয়। পর্যায়ক্রমে সেগেুলো ঝালাইয়ের মাধ্যমে মেরামত করেন রেলওয়ে শ্রমিকরা। কিন্তু ট্রেন চলাচলের ফলে ঝালাইকৃত স্থানের কিছু ভেঙে পড়ে যায়। স্থানীয়রা যখন ভাঙা অংশ দেখতে পান ততক্ষণে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা মেইল আড়িখোলা স্টেশন থেকে ছেড়ে যাচ্ছিল ঢাকার উদ্দেশে। সঙ্গে সঙ্গে তারা স্টেশন মাস্টারকে খবর দিলে তিনি ট্রেন থামিয়ে ঘটনাস্থলে মিস্ত্রি পাঠান। শ্রমিকরা ১ ঘণ্টার চেষ্টায় ট্রেন লাইন সংস্কার করেন। এভাবে অল্পের জন্য ট্রেনটি দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়। আর 

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আরমান হোসেন। বিষয়টি দুপুরের দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সকালে উপজেলার আড়িখোলা স্টেশনের কাজী বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে যাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।

রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আরমান হোসেন বলেন, ‘সময় তখন সকাল সোয়া ৭টা। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ঢাকা মেইল আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনে আসে। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন স্টেশন থেকে ছাড়ার কিছুক্ষণ পর স্থানীয় কয়েকজন এসে জানান কাজী বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় রেললাইনের কিছু অংশ ভেঙে পড়ে আছে। আমি তখন ট্রেনটি জরুরিভিত্তিতে থামিয়ে ঘটনাস্থলে দায়িত্বপ্রাপ্ত শ্রমিকদের পাঠিয়ে দ্রুত রেল যোগাযোগ সচল করি। তবে এতে করে ওই লাইনে ১ ঘণ্টা রেল যোগাযোগ বিলম্বিত হয়। অন্য লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।’  

আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশন ইনচার্জ দিলীপ চন্দ্র দাস বলেন, রেলওয়েতে যে সকল শ্রমিক কাজ করে, এরা সাধারণত ঠিকমত কাজ করে না। তাদের কাজ হলো রেললাইনের সকল টেকনিক্যাল কাজগুলো দেখাশুনা ও তদারকি করা। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তা নির্ণয় করে মেরামত করা। আজকের ঘটনা যেখানে ঘটে, সেইস্থানে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তারা কাজ করেছে। কাজ যদি ঠিকমত করতো তাহলে এক দিনের ব্যবধানে কীভাবে ঝালাই ছুটে যায়? তাদের সব কাজে দুই নম্বরি।

রেলযাত্রী সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমি প্রতিদিন আড়িখোলা থেকে ঢাকায় ট্রেনে যাতায়াত করি। আজকেও সকালে ট্রেনের জন্য স্টেশনে অপেক্ষা করছিলাম। ঢাকা মেইল আসলে ট্রেনে চড়ে বসি। একটু যাওয়ার পর হঠাৎ করে ট্রেন ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয়। ট্রেন থেকে নেমে জানতে পারি, সামনে রেললাইন ভেঙে পড়ে আছে। অল্পের জন্য রক্ষা পেলাম।’

অপর যাত্রী নয়ন সরকার বলেন, রেলে কর্মরত শ্রমিকরা তাদের কাজ ঠিকমত করে না। আড়িখোলা স্টেশনের বেশ কয়েক জায়গায় এ রকম ঝালাই করেছে। যেগুলো তারা দায়সারাভাবে মেরামত করেছে। ভাগ্য ভালো ওই এলাকার মানুষ ভাঙা অংশটুকু দেখতে পেয়েছে। না হলে আজ বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। 

এ ব্যাপারে দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে জানতে আড়িখোলা রেলওয়ে স্টেশনের প্রধান মিস্ত্রী বাদশার মুঠোফোনে একাধিক বার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।