অতিরিক্ত যানযট থেকে মুক্তি দিতে দুই বছর আগে গাজীপুরে চালু করা হয় নৌপথে বৃত্তাকার স্পিডবোট সেবা। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এই সেবা চালু করে। জাঁকজমকভাবে উদ্বোধনের কিছুদিন পরই বন্ধ হয়ে গেছে স্পিডবোট সেবা। কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রী কম পাওয়া ও ভাড়া বেশি হওয়ার কারণে তিন মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় সেবাটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর টঙ্গী নদীবন্দর থেকে ঢাকা বৃত্তাকার নৌপথে স্পিডবোট সার্ভিস চালু করা হয়। স্পিডবোট চলাচল উদ্বোধন করেন তৎকালীন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং তৎকালীন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। এ সময় টঙ্গী ইকো পার্কও উদ্বোধন করেন তারা। প্রথম দিকে এই রুটে পাঁচটি স্পিডবোট চললেও পরে আরও কিছু দ্রুতগামী নৌযান (স্পিডবোট) যুক্ত হওয়ার কথা ছিলো। বেসরকারি উদ্যোগে টঙ্গী ও আব্দুল্লাহপুর থেকে কড্ডা, টঙ্গী থেকে কালীগঞ্জের উলুখোলায় পাঁচটি স্পিডবোট সেবা চালু করা হয়। নির্ধারণ করা হয়েছিল ভাড়াও। যাত্রী চাহিদা বাড়লে কড্ডা থেকে গাবতলী ও গাবতলী থেকে সদরঘাট পর্যন্ত স্পিডবোট চালুর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছিলো। এতে উচ্ছ্বসিত ছিলেন নদী পথের যাত্রীরা। কিছুদিন পর থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এই স্পিডবোট সেবা। কেন বন্ধ হয়ে গেছে সে সম্পর্কে পারেননি নদীবন্দর এলাকার কেউ।
আরও পড়ুন: টঙ্গীতে বিআইডব্লিউটিএ ইকোপার্ক ও নৌপথে স্পিডবোট সার্ভিস চালু
কড্ডা বাজার নৌ-ঘাটে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা শামসুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু ফেসবুকেই কড্ডায় স্পিডবোট দেখেছি। বাস্তবে আইসা আর দেখতে পারি নাই। মনে হয় কয়দিন চলছিলো। এখন তো আর চলে না। স্পিডবোট সার্ভিসটা চালু থকা দরকার ছিল।’
কাঠাললিয়াপাড়া এলাকার কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, ‘স্পিডবোট চালু হলেও কিছুদিন পর বন্ধ হয়ে যায়। এই কার্যক্রম চালু থাকলে ঢাকা যেতে আমাদের কম সময় লাগতো। পাশাপাশি নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করা যেতো। আমাদের নদীর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার পেছনে নদী পথে যাতায়াত সুবিধা কমে যাওয়া অন্যতম একটি কারণ।
টঙ্গী নদীবন্দর এলাকার মাঝি আওলাদ হোসেন বলেন, কয়েক বছর আগে মহা ধুমধামে কয়েকটি স্পিডবোট চালু করা হয়। পত্রপত্রিকাতেও লেখালেখি হয়। কিছুদিন চলার পর আর স্পিডবোটগুলো দেখা যায়নি। আমরা তো নদীর এপার ওপার পারাপার করি। অল্প সময়ে দূরের পথে যেতে স্পিডবোট ভালো যান।’
বৃত্তাকার স্পিডবোট সেবা বন্ধ কেন জানতে চাইলে টঙ্গী নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ‘সার্ভিস চালু হওয়ার তিন মাস পরেই বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রী পাওয়া যায় না, ভাড়াও বেশি বলে অভিযোগ ছিল। এছাড়া, শীতকালে স্পিডবোটের পাখায় আর্বজনা বেঁধে থাকতো। যে কারণে স্পিডবোট চালাতে অসুবিধা হচ্ছিল চালকদের। এজন্য সেবাটি বন্ধ হয়ে গেছে।’