সারা বাংলা

লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদীর বাঁধ কেটে রাস্তা-অস্থায়ী জেটি নির্মাণ

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মাতাব্বরহাট এলাকায় মেঘনা নদীর তীর রক্ষা বাঁধ কেটে ও ব্লক সরিয়ে ট্রাক্টর চলাচলের জন্য রাস্তাসহ দুটি অস্থায়ী জেটি স্থাপন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে মাটি সরে বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে কোনো সময় বাঁধ ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

কমলনগর উপজেলার মাতাব্বর হাটবাজার এলাকার নদী তীর রক্ষা বাঁধটিতে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধ ঘেঁষেই ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ব্লক নির্মাণের কারখানা। নদীর অন্যান্য এলাকায় বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পে তারা পাঁচটি প্যাকেজের ১৫টি লটে কাজ করছে। সেসব স্থানে ব্লক নিতে নদীপথ ব্যবহারের জন্য তারা তীর রক্ষা বাঁধটি কেটে ট্রাক্টর চলাচলের রাস্তা করে নিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বাঁধের ব্লক সরিয়ে দুটি অস্থায়ী জেটি স্থাপন করেছেন তারা (ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড)। বেড়িবাঁধ কেটে স্থাপন করা একটি জেটিতে ভেকু মেশিন রেখে ট্রাক্টরের ওপর থেকে ব্লকগুলো নৌযানে উঠানো হয়। মাটি কাটার দুটি স্থানেই বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। মাটি ও ব্লক সরিয়ে রাস্তা-জেটি নির্মাণে বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সহকারী ইঞ্জিনিয়ার মো. বোরহান বলেন, ‘মেঘনার তীর রক্ষা বাঁধের প্রকল্পের ৫টি প্যাকেজে লুধুয়া, পাটওয়ারির হাটসহ বিভিন্ন এলাকায় আমাদের কাজ চলমান রয়েছে। সেসব স্থানে ব্লক নেওয়ার জন্য বাঁধ কেটে ট্রাক্টরের জন্য রাস্তা করা হয়েছে। এছাড়া বাঁধের ব্লক সরিয়ে দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে লিখিত কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি। বাঁধটির কোনো ক্ষতি হবে না আশা করছি। কাজ শেষে পুনরায় বাঁধ ঠিক করে দেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাঁধটিতে ইতোমধ্যে কয়েকবার ধ্বস নেমেছে। এরপর আমরা তা ঠিক করে দিয়েছে। আমাদের কারখানা রয়েছে, তাই নিজেদের স্বার্থেই তা (বাঁধ) ঠিক করা হয়েছে।’

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, ‘বেড়িবাঁধ কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই। বাঁধের দায়িত্ব পুরোটাই পানি উন্নয়ন বোর্ডের। তারা আমাদেরকে কিছু জানায়নি। বাঁধের ওপর একটি গাছ রোপণ করতে হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে অনুমতি নিতে হয়। তারা যদি আমাদেরকে বিষয়টি অবহিত করতেন, অবশ্যই তাদের আমরা সহযোগিতা করতাম। বিষয়টি নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা বলব।’  

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী  নাহিদুজ্জামান বলেন, ‘দুজন কর্মকর্তাকে সরজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’