সারা বাংলা

কুষ্টিয়ায় গুলিতে নিহত ইউপি চেয়ারম্যানের দাফন সম্পন্ন

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে নিজ কার্যালয়ে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নঈম উদ্দীন সেন্টুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নিজ এলাকায় তাকে দাফন করা হয়। এর আগে, গতকাল সোমবার রাতে নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। 

হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় এখনো পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, পরিবারে পক্ষ থেকে মামলা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: গুলি করে হত্যা: ৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার হলো ইউপি চেয়ারম্যানের লাশ

ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‌‘নিহত ইউপি চেয়ারম্যানের শরীরে দুটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, শটগান দিয়ে তাকে গুলি করা হয়েছে। আরও তদন্তের পর বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে।’

এদিকে, নিহত ইউপি চেয়ারম্যান নঈম উদ্দীন সেন্টুর সমর্থকরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনের বাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ ‍উঠেছে। 

নিহতের পরিবার ও স্বজনরা বলেন, ফিলিপনগর স্কুল বাজার এলাকার মহির উদ্দীনের ছেলে তরিকুল ইসলাম টুকু ও তার বাহিনীর লোকজন সেন্টু চেয়ারম্যানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ইউপি চেয়ারম্যানকে নিজ পরিষদে গুলি করে হত্যা

ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদে সচিব রাশিদুল ইসলাম বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে টুকু ও তার বাহিনীর রুবেল, সোহাগ গিট্টু, রওশন, রাখি, নাজমুল, রাসেল, সোহাগ, উজ্জ্বল, হবি, জামিল বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। শুরু করেন হাট-ঘাট দখল, লুটপাট, চাঁদাবাজি, প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলাসহ নানা অপরাধ। এ বিষয়ে অনেকেই চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। চেয়ারম্যান এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বলায় তাদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এ ঘটনার জেরে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে থাকতে পারে। হত্যার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক। 

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান বলেন, পূর্ব শত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাকে (ইউপি চেয়ারম্যান) হত্যা করা হতে পারে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপ্রীতিকর যে কোনো ঘটনা প্রতিরোধে পুলিশ কাজ করছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার সকাল ১১টার দিকে ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন নঈম উদ্দীন সেন্টু। ঘটনার পর চেয়ারম্যানের লোকজন ইউনিয়ন পরিষদে এলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ঘটনাস্থলে যেতে বেগ পেতে হয়। এ সময় পুলিশকে ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে অবরোধ করে রাখেন স্থানীয়রা। প্রায় চার ঘণ্টা নঈম উদ্দীন সেন্টুর লাশ কক্ষের মেঝেতেই পড়ে থাকে। পরে র‌্যাব, বিজিবি ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সেনা সদস্যদের সহযোগিতায় বিকেল ৩টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।