সারা বাংলা

ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ, ৪০ হাজার টাকায় রফার চেষ্টা

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় ৯ম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় ৪০ হাজার টাকায় আপস করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনার দুইদিন পর স্থানীয়ভাবে সালিশের নামে অভিযুক্তর বাড়ির সামনে ডেকে সালিশ বসিয়ে কিশোরীর বাবার কাছ থেকে ফাঁকা (কিছু না লেখা) ষ্ট্যাম্পে জোর পূর্বক স্বাক্ষর নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। 

ভুক্তভোগী পরিবারটি জানায়, ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য হুমায়ুন মোড়ল ও কামরানের চাপে গত রোববার বেলা ১১টার দিকে ধর্ষকের বাড়ির সামনের রাস্তায় সালিশ বৈঠক হয়। সেখানেই জোর করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে মেয়ের বাবার হাতে ৪০ হাজার টাকা ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। 

হুমায়ুন মোড়ল ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়ন বিএনপির সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক। তবে কামরানের দলীয় পদ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

নিরাপত্তার কারণে ওই স্কুল ছাত্রীকে এলাকার বাইরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়েছে তার পরিবার। সেখান থেকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। 

স্থানীয় প্রভাব ও পারিপার্শ্বিক চাপে রাতে বাড়ি থাকতে পারছেন না জানিয়ে ওই কিশোরীর বাবা বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে মুঠোফোনে বলেন, আমি দিনমজুরি কাজ করে সংসার চালাই। গত বৃহস্পতিবার কাজের কারণে বাগেরহাটে ছিলাম। আমি বাড়িতে না থাকার সুযোগে ওই রাতে প্রতিবেশী গৌরঙ্গ দাস (৩২) আমার মেয়েকে অচেতন করে ঘরের জানালা ভেঙে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ভোর রাতে মেয়েকে বাড়ির পাশের একটি পুকুর সংলগ্ন বাগানে খুঁজে পাই। পরদিন শুক্রবার সকাল থেকেই ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তোড়জোড় শুরু করে স্থানীয়ভাবে বিএনপি নেতা পরিচয় দেওয়া কিছু ব্যক্তি। তাদের মাঝে ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য হুমায়ুন মোড়ল ও কামরানের চাপে রোববার বেলা ১১টার দিকে ধর্ষকের বাড়ির সামনের রাস্তায় সালিশ বৈঠক হয়। সেখানেই জোর করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ৪০ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে বিষয়টি আপোষ করার চেষ্টা করে তারা। 

ওই কিশোরীর বাবা আরও বলেন, ঘটনার পর মেয়েকে খুলনায় আত্মীয়র বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি। এ ঘটনায় আমি বাড়ি-ঘরে থাকতে পারছি না। আমি একজনকে স্ট্যাম্পের ফটোকপি আনতে পাঠিয়েছিলাম। তারা বলেছে দেওয়া যাবে না। তারা প্রভাবশালী তাই কোথাও অভিযোগ করতেও ভয় পাচ্ছি। 

এ বিষয়ে জানতে বিএনপি নেতা হুমায়ুন মোড়লের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কে বলেছে আপনাকে। অভিযোগকারীর কাছে খোঁজ নেন। এসব বিষয়ে আমাকে কিছু বলে লাভ নেই। আমি কিছু জানি না।’ পরে তিনি ফোন কেটে দেন। 

ফকিরহাট থানার ওসি আশরাফুল আলম বলেন, এখনও এ ধরণের কোনো অভিযোগ কেউ করেনি। যদি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে থাকে তাদের নির্ভয়ে থানায় আসতে বলেন। আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।