সারা বাংলা

বাগেরহাটে হামলার প্রতিবাদে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, ভোগান্তিতে রোগীরা

বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে চিকিৎসকদের উপর হামলা ও মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছে চিকিৎসকরা। 

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সকাল থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে সেবা বন্ধ রাখায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সেবা নিতে আসা রোগীরা।

এদিকে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় না আনা পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা। 

চিকিৎসকদের অভিযোগ, বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ঢুকে তিন চিকিৎসকের উপর হামলা করা হয়। এ সময় মোড়েলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা চন্দন দাসসহ তিনজন ডাক্তার আহত হন। ঘটনার পর মোড়েলগঞ্জ থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের আটক করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার দাবি তোলেন ডাক্তাররা। 

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা সুরাইয়া বেগম বলেন, সকালে আমার স্বামীকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এসেছি। আসার পর শুনতে পাই এখানে ডাক্তাররা কর্মবিরতি পালন করছেন। বহির্বিভাগে সেবা নিতে না পেরে এখন চলে যেতে হচ্ছে। 

অপর এক রোগীর স্বজন আব্দুস সালাম বলেন, শুনেছি ডাক্তারদের উপর হামলা হয়েছে এজন্য ডাক্তাররা বহির্বিভাগে রোগী দেখছেন না। হাসপাতালের টিকেট কাউন্টারটিও বন্ধ রয়েছে। আমরা সেবা নিতে না পেরে ভোগান্তিতে পড়েছি।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. রেজোয়ানা মেহজাবিন বন্যা বলেন, স্থানীয় মো. শিমুল শেখ নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল গতকাল জরুরী বিভাগ থেকে ডাক্তার চন্দন দাসকে বের করে বেধরক মারপিট করতে থাকে। আমি এবং জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. তনুশ্রী ডাকুয়া ঠেকাতে গেলে হামলাকারীরা আমাদেরও মারধর করে। হামলাকারীরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. শর্মী রায়কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এই ঘটনায় মোড়েরগঞ্জ থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় না আনা পর্যন্ত আমরা বহির্বিভাগের সেবা বন্ধ করে কর্ম বিরতি পালন করবো। কর্মবিরতি চলাকালে শুধুমাত্র হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের সেবা দেওয়া হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় না আনা হচ্ছে ততক্ষণ আমাদের কর্মবিরতি চলবে। 

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডাক্তার জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, হাসপাতালে ঢুকে চিকিৎসকদের উপর হামলার বিষয়টি হতাশাজনক। হামলা ও মারপিটের পর চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে হামলার বিষয়টি অনুসন্ধান করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। 

মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামসুদ্দিন বলেন, চিকিৎসকদের উপর হামলার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিমুল শেখ গা ঢাকা দেওয়ায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।