বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, লড়াই করে যারা আহত ও নিহত হয়েছেন তারা কোনো চাকরি পাওয়ার জন্য বা কারো সহায়তা পাওয়ার জন্য লড়াই করেনি। শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ব আছে। যারা লড়াই করে বুকের রক্ত দিয়ে এ সমাজের মুক্তি এনে দিয়েছেন তাদের পরিবারগুলোর প্রতি সরকারকে অবশ্যই নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। জাতিকেও দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা দাবি করি প্রত্যেকটা শহীদ পরিবারের কমপক্ষে একজনকে যেন সরকার সম্মানজনক চাকরি দেন।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুর জেলা শহরের রাজবাড়ি ময়দানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শাহাদাত বরণকারী পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
জামায়েত আমীর বলেন, জাতির সাথে গাদ্দারি করলে, সেবক হয়ে আসার ঘোষণা দিয়ে মালিক বনে গেলে কি পরিণতি হয়। দেশ থেকে যারা পালিয়েছেন এটা থেকে আমি ও আমরা এবং দেশবাসী যেন শিক্ষা নেয়। আমরা আজ হোক, কাল হোক, নিকটে হোক ভবিষ্যতে হোক, কখনোই আর কোনো সন্ত্রাসী সরকার দেখতে চাই না। আমরা জানিয়ে দেবো এখন থেকে বাংলাদেশের মানুষ কালোকে কালো বলবে আর সাদকে সাদা বলবে।
মালিক-শ্রমিকদের বিষয়ে তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠী আমাদের দেশের মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধাতে চায়। যারা এই সমাজের দুশমন তারাই শিল্প ধ্বংস করতে চায়। তারা শ্রমিকদের আবেগকে উসকে দিয়ে রাস্তায় নামায়। মরে শ্রমিকেরা ঘরে বসে বেনিফিট নেই তারা। আবার কিছু মালিক আছে যারা শ্রমিকের শুধু ঘাম নয়, পারলে রক্তটাও চুষে নিতে চায়। শিল্প যারা বাঁচাবে তাদেরকে বাঁচতে দিন। আপনি তাদের সম্মান করবেন, তারা তাদের সর্বোচ্চটা আপনাকে উজাড় করে দিবে। আমরা চাই ব্যবসায়ীরা তাদের জায়গায় ব্যবসা করবে। কোনো দুর্বৃত্তের সাহস হবে না তাদের কাছ থেকে চাঁদা চাওয়ার।
জবাবদিহিতা ও বিচারবিভাগ নিয়ে বলেন, এমন একটা সমাজ প্রয়োজন যে সমাজে শিক্ষিতরা কলমের খোঁচায় হাজার হাজার কোটি টাকা জাতির কাছ থেকে লুন্ঠন করবে না। কলম হাতে নিয়ে তার কলিজাটা থর থর করে কাঁপবে এই ভেবে যে আখেরাতে আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে। আমরা শপথবদ্ধ কোনো রাজনীতি ব্যক্তিকে আদালতে বিচারক হিসেবে দেখতে চাই না। একজন সরকারি কর্মকর্তা তিনি রাষ্ট্রের সেবক। কোনো দল বা ব্যক্তির সেবা করতে পারে না।
দলীয় নির্যাতনের বিষয়ে জামায়েত আমীর বলেন, আমরা বলেছিলাম কারো প্রতি অবিচার করবো না, কোনো প্রতিশোধ নেবো না। সেটা আমরা করিনি। আমাদের উপর গত ১৫ বছর যে অত্যাচার হয়েছে তা ইতিহাসের সবচেয়ে নিকৃষ্টতম নির্যাতন। তারপরেও আমাদের নেতাকর্মীরা ৫ আগস্টের পর কোথাও কারও ব্যবসা বা বাড়িতে হামলা করেনি।
গাজীপুর মহানগর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মুহা. জামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা অঞ্চল উত্তর অঞ্চল টীম সদস্য আবুল হাসেম খান ও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, জেলা আমীর ড. জাহাঙ্গীর আলম, নায়েবে আমীর মুহাম্মদ খায়রুল হাসান প্রমুখ।