সারা বাংলা

তিস্তার ভাঙন রোধে বড় প্রকল্প নেয়নি বিগত সরকার: আমিরুল হক

বছরের পর বছর ধরে তিস্তা নদীর দুই পাড়ে ভাঙন অব্যাহত থাকলেও তা রোধে এই নদীতে নেওয়া হয়নি স্থায়ী কোনো প্রকল্প। ফলে প্রতিবছর ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন শতশত পরিবার। এবারও বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর তীব্র হয়ে উঠেছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে তিস্তার ভাঙন।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে জেলার রাজারহাট উপজেলায় তিস্তার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে আসেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঞা। তিনি নদীর দুই পাড় পরিদর্শনের পাশাপাশি উপজেলার কালিরহাট এলাকায় নদী পাড়ের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন।

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ আমিরুল হক ভূঞা বলেন, ‌‘মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আশায় তিস্তার চলমান ভাঙন রোধে বড় কোনো প্রকল্প গ্রহণ করেনি বিগত সরকার। যদিও কুড়িগ্রাম জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীতে স্থায়ী ভাঙন রোধে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু জরুরি ভিত্তিতে বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেলে তিস্তার ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছে। ফলে তিস্তার তীব্র ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হয়নি। তিস্তার স্থায়ী ভাঙন রোধে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য চীনের সঙ্গে বিগত সরকার আলোচনা করেছিল। তবে, সেটিও নীতিনির্ধানী পর্যায়ে রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার নিজেদের সমীক্ষা শেষ হয়েছে। ড্রাফট ফাইনাল রিপোর্ট পাওয়া গেছে। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে চীনের সঙ্গে চুক্তি না হলে নিজেদের সমীক্ষা অনুযায়ী নিজেদের অর্থে তিস্তা পরিকল্পনা বাস্তবয়ন করা হবে।’

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক বলেন, এ ক্ষেত্রে তিস্তার স্থায়ী ভাঙন রোধে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগে ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোতে অনুন্নয়ের বাজেট দিয়ে কাজ করার কথাও জানান তিনি। 

মতবিনিময় সভায় তিস্তার ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের পাশাপাশি বক্তব্য রাখেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ও রিভারাইন পিপলস এর পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ। তিনি বলেন, ‘তিস্তার সমস্ত শাখা নদী বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত উপ-নদী বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিস্তার চরিত্র বদলে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই নদীর দুইপাড় ভাঙছে। 

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. মাহবুবর রহমান, রংপুর বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রাফসান জানি প্রমুখ।