সারা বাংলা

শেরপুর-নালিতাবাড়ী আঞ্চলিক সড়ক ভেঙে যান চলাচল বন্ধ 

টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে ভেঙে যাওয়ায় শেরপুর-তিনআনী-নালিতাবাড়ী আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রানীগাও এলাকায় সড়কটি ভেঙে যায়। ফলে জেলা শহরের সঙ্গে নালিতাবাড়ী উপজেলায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুর্গত এলাকায় যেতে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে। ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার ঘুরে তাদের যেতে হচ্ছে বন্যাদুর্গত এলাকায়। 

আরও পড়ুন: শেরপুরে বন্যায় ৪ মৃত্যু, নৌযানের অভাবে উদ্ধার কাজ ব্যাহত

এদিকে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নৌকাসহ ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে আসা গাড়িগুলো সড়ক ভাঙা থাকায় আটকে যাচ্ছে। তিনানী বাজার হয়ে নাকুগাও স্থলবন্দর এলাকা দিয়ে নালিতাবাড়ী শহরে আসতে হচ্ছে গাড়িগুলোকে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে জিওব্যাগ দিয়ে সড়কের ভাঙন রোধ করা হবে।

রানীগাও এলাকার আব্দুর রহিম বলেন, ‘গতকাল থেকে আমি গরুগুলো রাস্তায় রেখেছি। এর মধ্যে একটা গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে। গরুটিকে নিয়ে পশু হাসপাতালে যেতে পারছি না। দ্রুত রাস্তাটি মেরামত করে দিলে ভালো হয়।’

একই গ্রামের সালেমা আক্তার বলেন, ‘সড়কে ভাঙন দেখা দেওয়ায় দুই পাশে অনেক গাড়ি আটকে আছে। মনে হচ্ছে এটা একটা পিকনিক স্পট। বিভিন্ন জায়গা থেকে ট্রাকে ত্রাণ সামগ্রী এসেছে। ভাঙন দেখা দেওয়ায় ট্রাকগুলো বন্যদুর্গত এলাকায় যেতে পারছে না। রাস্তার কাজ শেষ করে দিলে দুর্গত এলাকার মানুষের উপকার হতো।’

জামালপুর থেকে মিনি ট্রাকে শুকনা খাবার নিয়ে আসা স্বেচ্ছাসেবী দলের সদস্য হুমায়ূন আহমেদ সাকিব বলেন, ‘আমরা ৪০০ প্যাকেট খাবার নিয়ে এসেছি। শুনেছি, নালিতাবাড়ীর বেশ কিছু এলাকার মানুষ খাবার সংকটে আছে। আমরা এখনো নালিতাবাড়ী শহরেই পৌঁছতে পারলাম না। এখন আমরা রাস্তা পরিবর্তন করে অন্য রাস্তা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’

শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাকিরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক সড়কই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেগুলো আপদকালীন সময়ে মেরামত যোগ্য সেগুলো কাজ করা হচ্ছে। এখন অনেক সড়ক চলাচলের উপযোগী নয়। যেসব জায়গায় বেশি ভেঙে গেছে সেগুলো খুব দ্রুত মেরামত শুরু করা হবে। বাকিগুলোর কাজ পানি কমে গেলে শুরু করা হবে।’

নালিতাবাড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘দুপুরে রাস্তা ভেঙে যাওয়ার পরপরই সড়ক বিভাগের সঙ্গে কথা বলে জিওব্যাগ নিয়ে মেরামতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। জরুরি সময়ে সবাইকে বিকল্প সড়ক ব্যবহারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

উল্লেখ্য, বন্যায় ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার অন্তত ১৪টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় চরম কষ্টের মধ্যে পড়েছেন লোকজন। এখন পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।