সারা বাংলা

হত্যা মামলার আসামি মৃত ব্যক্তি!

গাজীপুরের শ্রীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনের সময় গুলিতে আসীর ইনতিশারুল হক নামে এক কলেজছাত্র নিহত হন। সেই ঘটনায় আসীরের বাবা আ হা ম এনামুল বাদী হয়ে গত শুক্রবার (৪ অক্টোবর) শ্রীপুর থানায়একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

এতে কালা মিয়া নামে এক মৃত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মরহুমের পরিবার ও স্বজনরা ক্ষোভ জানিয়েছেন।

জানান গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আন্দোলনের সময় নির্বিচারে ছোঁড়া গুলিতে নিহত হন কলেজছাত্র আসীর ইনতিশারুল হক। তার বাবা আ হা ম এনামুল বাদী হয়ে গত ৪ অক্টোবর শ্রীপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আর সেই মামলায় ১৭০ নম্বর আসামি করা হয়েছে মরহুম কালা মিয়াকে। এছাড়াও সাবেক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকসহ আওয়ামী লীগের ২২৭ জন নেতা–কর্মীর নাম ও অজ্ঞাত ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে ওই মামলায়।

মরহুম কালা মিয়া শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের ধামলই গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি গত ২৫ সেপ্টেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। কালা মিয়া কাওরাইদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ছিলেন। 

মামলার বিষয়ে জানতে বাদী আ হা ম এনামুলের মোবাইল ফোনে কল করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। যে কারণে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মরহুম কালা মিয়ার ছেলে আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আমার বাবা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন ঠিক। তাই বলে মৃত মানুষকে হত্যা মামলার আসামি করতে হবে? বাবা গত ২৫ সেপ্টেম্বর মারা গেছেন। তাহলে কী করে বাবার নামে মামলা নিল পুলিশ? আমরা পরিবারের সদস্যরা খুবই কষ্ট পেয়েছি।’ 

কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আলম খান বলেন, ‘গত ২৫ সেপ্টেম্বর কালা মিয়া মারা যান। ওই দিন তার বাড়িতে জানাজা শেষে মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আমি জানাজা ও দাফনের সময় উপস্থিত ছিলাম।’

আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে কালা মিয়ার জড়িত বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেন কাওরাইদ ইউপির চেয়ারম্যান আজিজুল হক। তিনি বলেন, ‘যে মানুষটা ২৫ সেপ্টেম্বর মারা গেল তাঁকে কীভাবে হত্যা মামলায় আসামি করে? এটা পুলিশের দায়িত্বহীনতার প্রমাণ।’   শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ‘এজাহারের সময় আসামি মৃত কিনা শনাক্ত করতে পারিনি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’

গাজীপুর জেলা পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কালিয়াকৈর সার্কেল আজমীর হোসেন বলেন, ‘মামলা বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের কাজ হয়ে থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’