সারা বাংলা

বাগেরহাটে বাজারে পূজার উত্তাপ নেই, ব্যবসায়ীরা হতাশ 

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার বাগেরহাটের বাজারে কেনাকাটায় উত্তাপ নেই। বুধবার (৯ অক্টোবর) মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে শুরু হচ্ছে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। শেষ সময়েও বাজারে তেমন ভিড় নেই। পূজা উপলক্ষে কাঙ্ক্ষিত বিক্রি না থাকায় পোশাক বিক্রেতারা হতাশ।

সোমবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে বাগেরহাট শহরের কাপড় পট্টি, হাজী রিয়াজ উদ্দিন মার্কেটসহ বিভিন্ন কাপড়ের দোকান ঘুরে দেখা যায়, দোকানিরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। কোনো কোনো দোকানে স্বল্প সংখ্যক ক্রেতা থাকলেও তেমন বিক্রি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তারা।

ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বছর পূজার সাত দিন আগে থেকে পূজা শেষ হওয়া পর্যন্ত ভালো বিক্রি হয়। বিভিন্ন এলাকার মানুষ দল বেঁধে কেনাকাটা করতে আসতেন।  এবার তেমন ক্রেতা নেই। পূজাকে কেন্দ্র করে দোকানে নতুন পোশাকের পর্যাপ্ত সংগ্রহ থাকলেও সেই অনুযায়ী বিক্রি নেই।

উজ্জ্বল মোল্লা নামের একজন পোশাক বিক্রেতা বলেন, শরতের মোহনীয় রূপের সঙ্গে মানানসই ধর্মীয় এবং ট্রেন্ডি পোশাক এখন হালফ্যাশনে জায়গা করে নিয়েছে। তার দোকানে ধুতি, পায়জামা, পাঞ্জাবি, প্যান্ট, টিশার্ট, শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, থ্রিপিস রাখা হয়েছে। যুক্ত হয়েছে ওয়েস্টার্ন পোশাকও। সব ধরনের আইটেম রাখার পরও এবার ক্রেতা নেই বললেই চলে।

প্রসাধনী বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, পূজার সময় ঘনিয়ে এলেও বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম। গত বছরের তুলনায় এ বছর ক্রেতা কম থাকায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে।

বাচ্চার জন্য পূজার পোশাক কিনতে আসা মৌসুমী দেবনাথ বলেন, ‘আমি আমার বাচ্চার পছন্দ মতো জামা কিনেছি। কিন্তু জামা-কাপড়ের দাম বেশি। তারপরও যেহেতু বাচ্চা পছন্দ করছে, তাই তার পছন্দ মতো নিয়েছি। লোকজন কম থাকায় দোকানগুলো ঘুরে স্বাচ্ছন্দে কেনাকাটা করতে পেরেছি।’

থ্রিপিসসহ বিভিন্ন ধরনের কাপড়ের ব্যবসায়ী দুলাল চন্দ্র দাস বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার বিক্রি অর্ধেকেরও কম। গত বছর পূজার দুই সপ্তাহ আগে থেকে দৈনিক ৩০-৪০ হাজার টাকা বিক্রি হতো। এবার সেটা ১০-১৫ হাজারে নেমেছে। পূজা শেষ হলে সেটা আরও কমে দৈনিক ৫-৬ হাজারে নামবে। সব মিলিয়ে ব্যবসার অবস্থা ভালো না।

তন্ময় সরকার নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘কাপড়ের দাম অনেক বেশি। ইচ্ছা ছিল শার্ট, প্যান্ট কিনব। দাম বেশি হওয়ায় শুধু প্যান্ট কিনেই ফিরে যাচ্ছি৷ বাজেট কম, পরে এসে শার্ট কিনব।’

বস্ত্র ব্যবসায়ী মালিক সমিতি ও কাপড় মালিক সমিতির সভাপতি কার্তিক ভট্টাচার্য বলেন, এ বার পরিবেশ পরিস্থিতি ভালো না থাকার কারণে বিক্রি কম। রাজনৈতিক অস্থিরতা, বন্যা, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষও অর্থনৈতিকভাবে দূর্বল। এবার কাপড় ব্যবসায়ীদেরও দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। হয়ত পূজার পর অনেক দোকান বন্ধ হয়ে যাবে।