নিষেধাজ্ঞা শেষে কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য আহরণের প্রথম এক মাসে রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় চার কোটি টাকা। বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটির হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলধারা ও বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান মৎস্য উৎপাদন ক্ষেত্র রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ। যা দেশের মিঠা পানির মাছের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। বাণিজ্যিভাবে মাছের উৎপাদন দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে হ্রদের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। যার সুফল ভোগ করছে এ অঞ্চলের ২২ হাজারেরও বেশি মৎস্যজীবী। হ্রদ থেকে আহরিত মাছ চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রেখে চলেছে কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য সম্পদ।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) সূত্রে জানা গেছে, ১ সেপ্টেম্বর থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু হয়। এরপর প্রতিদিনই বাড়ছে মৎস্য আহরণ। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে এক মাসে মৎস্য বিপণন কেন্দ্রে মাছ অবতরণ করা হয়েছে ১ হাজার ৯৪৩ টন। যা থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৯১ হাজার ৪৮৯ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে মৌসুমের প্রথম মাসে মৎস্য বিপণন কেন্দ্রে মাছ অবতরণ করা হয়েছিল ১ হাজার ৯২৫ টন। যা থেকে রাজস্ব আয় হয়েছিল ৩ কোটি ৯৪ লাখ ৫৩ হাজার ৭৯০ টাকা। গত বছরের তুলনায় এবছর প্রথম মাসে মৎস্য আহরণ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১৮ টন এবং রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯৯ টাকা।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) রাঙামাটি অঞ্চলের হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. আশরাফুল আলম ভুঁইয়া জানান, কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য উৎপাদন প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন রাজস্ব পাওয়া যাচ্ছে, অন্যদিকে তেমনি স্থানীয় মানুষের আমিষের যোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি এই এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে হ্রদের মাছ ভূমিকা রাখছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানি ১০৫ ফুট এর উপরে আছে। পানির স্তর যদি ঠিক থাকে তাহলে মাছের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে গেলে জেলেদের মাছ শিকার করা কঠিন হয়ে পড়ে।
প্রসঙ্গত, প্রাকৃতিক প্রজনন ও কার্প জাতীয় মাছের বংশবিস্তারের লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাসের জন্য কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধ থাকে। হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হয় গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে।