সারা বাংলা

বাঁশের সাঁকোই দুই গ্রামের একমাত্র ভরসা

নড়বড়ে একটি বাঁশের সাঁকো। তা দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে দুই গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। যাতায়াতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন রোগী, শিক্ষার্থী ও কৃষকেরা। বারবার আবেদন করার পরেও আশ্বাস ছাড়া মেলেনি কোনো সমাধান। স্থানীয়দের দাবি একটি সেতুর নির্মাণের। অন্যদিকে কর্তৃপক্ষের আশ্বাস এলাকা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়ার। 

সরেজমিনে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে জাজিরা পৌরসভা গঠিত হওয়ার পর থেকে পৌরসভার ২নং ও ৯নং ওয়ার্ডের বয়াতি কান্দি এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া কীর্তিনাশার শাখা নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি করে আসছিল স্থানীয়রা। বারবার পৌর মেয়র পরিবর্তন হলেও এই এলাকায় কেউ করেনি সেতু। প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে পার হয় আহাদি বয়াতি কান্দি ও সোনার দেউল গ্রামসহ দুই পাড়ের কয়েক হাজার মানুষ। পূর্ব পাড়ে রয়েছে অন্তত কয়েক হাজার একর ফসলি জমি ও বসতি। পশ্চিম পাড়ে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বসতভিটাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। 

পূর্ব পাড়ে বিভিন্ন প্রয়োজনে দুই পারের মানুষকে সাঁকো দিয়ে পারি দিতে হয় চরম ঝুঁকি নিয়ে। সাঁকো পার না হলে গন্তব্যে ঘুরে যেতে হয় অন্তত ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার এলাকা। অনেক সময় ভারী বর্ষণের কারণে সাঁকো দিয়ে চলাচল করা সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোতে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা বলছেন, একটি সেতু নির্মাণ হলে দুই পারের কৃষক, শিক্ষার্থী, রোগী ও ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি মুক্ত ভাবে নদী পারাপার হতে পারবেন।

 

শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন ও ছায়েদুল ইসলাম বলে, আগে এই সেতু দিয়ে নির্ভয়ে নদী পার হয়ে স্কুলে যাতায়াত করত তারা। এখন বাঁশের সাঁকো পারাপারে ভয় লাগে। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে। 

স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন বিল্লাল হোসেন বলেন, সেতু না থাকায় যাতায়াতের জন্য ৩-৪ বার বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। সেটিও ভেঙে যাচ্ছে বারবার। এ মুহূর্তে জরুরি প্রয়োজন একটি নতুন সেতু নির্মাণ। 

সেতু ভেঙে যাওয়ায় পণ্য পরিবহন, রোগীকে হাসপাতালে আনা-নেওয়ায় অনেক কষ্ট করতে হয় বলে জানান বয়াতি কান্দ গ্রামের কৃষক সফিকুল ইসলাম ও বাবুল মিয়া। 

বয়াতি কান্দি এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অনেক দিন ধরে সেতুটি ভেঙে পড়ে আছে। এই সড়ক দিয়ে চলাচলের ক্ষেত্রে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। সেতুর গোরায় মাটি না থাকায় ও সেতু মাঝামাঝি স্থানে ভেঙে পড়ায় কোনো গাড়ি চলে না। এখন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। 

এ বিষয়ে জাজির উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন, নতুনভাবে পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। বর্তমানে পৌরসভার উন্নয়নমূলক কার্যক্রম কী পর্যায়ে আছে, তা পর্যবেক্ষণ করছি। সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষের সহযোগিতায় আমরা দ্রুত সমস্যাগুলোর সমাধান এবং উন্নয়নের ধারাকে গতিশীল করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করব।