কোস্টগার্ড পূর্ব জোন চট্টগ্রামের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল হক বলেছেন, ‘মিয়ানমার নৌবাহিনী বাংলাদেশের জলসীমায় এসে এ দেশের মাঝি-মাল্লাদের ধরে নিয়ে যায়নি। বরং এ দেশের ছয়টি ট্রলারসহ ৫৮ জেলে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা অবস্থায় ভুলবশত মিয়ানমার জলসীমায় ঢুকে পড়েছিল। তাদের অনুপ্রবেশকারী মনে করে সেই দেশের নৌবাহিনীর টহলরত একটি স্পিডবোট থেকে ট্রলারগুলো লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে একজন ঘটনাস্থলে মারা যান।’
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে কোস্টগার্ডের টেকনাফ স্টেশনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ছয় ট্রলার ও জেলেদের ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমার নৌবাহিনী
ক্যাপ্টেন জহিরুল হক বলেন, ‘গত ৬ অক্টোবর টেকনাফের শাহপরী দ্বীপ জেটি ঘাট থেকে ছয়টি ট্রলার ৫৮ জন জেলেসহ গভীর সাগরে মাছ ধরার উদ্দ্যেশে রওনা হয়। গত ৯ অক্টোবর সেন্টমার্টিন থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা অবস্থায় ভুলবশত তারা মিয়ানমারের জলসীমায় প্রবেশ করে। মিয়ানমার নৌবাহিনী অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ট্রলারসহ জেলেদের আটক করে নিয়ে যায়। পরে বঙ্গোবসাগরে টহলরত কোস্টগার্ডের জাহাজ তাজউদ্দিন বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর মিয়ানমার নৌবাহিনীর টহলরত জাহাজের সঙ্গে যোগাযোগ করে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে আটককৃত জেলেদের ফিরিয়ে আনা হয়।’
ক্যাপ্টেন জহিরুল হক বলেন, ‘ওইদিন দুপুরে নিহত ব্যক্তিসহ ১১ জেলেদের বহনকারী ট্রলারটি কোস্টগার্ডের সহায়তায় শাহপরী দ্বীপ জেটি ঘাটে এসে পৌঁছায়। পরে সন্ধ্যায় পাঁচটি ট্রলার ৪৭ জন জেলেসহ বিসিজিএস তাজউদ্দিন এর নিকট হস্তান্তর করা হয়। এসব জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাবার সরববারহ করা হয় এবং কোস্ট গার্ড আউটপোস্ট শাহপরী কর্তৃক সবাইকে তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়।’
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিনে মিয়ানমার থেকে গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সীমান্তের কাছাকাছি এই ধরনের গুলিবর্ষণ কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মিয়ানমারে শিগগিরই প্রতিবাদ লিপি প্রদান করা হবে।’
কোস্টগার্ডের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা জলসীমার বিষয়গুলো চেনার জন্য ট্রলার মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেছি। বাংলাদেশের জলসীমা সবসময় নিরাপদ।’