সারা বাংলা

পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী পিনন-হাদির পোশাকে দেবী দুর্গা

শারদীয় দুর্গোৎসবের আজ দশমী পূজা। মণ্ডপে মণ্ডপে মায়ের পায়ে অঞ্জলি নিবেদন করে ভবিষ্যতের সুখ-শান্তির আশায় মায়ের কাছে প্রার্থনা করছেন ভক্তরা। আগামীকাল প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এই আয়োজন। এদিকে উৎসবমুখর এই আয়োজনে বাড়তি নজর কেড়েছে রাঙামাটির একটি পূজামণ্ডপ। যে মণ্ডপে মাকে সাজানো হয়েছে পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পিনন-হাদি পরিয়ে। 

শহরের কলেজগেইট এলাকার দুর্গা মাতৃমন্দিরে এবছর দুর্গা দেবীকে শাড়ির বদলে চাকমা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী লাল, কালো পিনন-হাদিতে শোভা পাচ্ছে। পাশাপাশি নীল ও লাল রঙের পিনন-হাদিতে লক্ষ্মী, আর ফিরোজা ও সাদা রঙের পোশাকে বীণা হাতে সরস্বতীকে মানিয়েছে বেশ। পাহাড়ি সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে দেবীর পোশাকে। 

আয়োজক কমিটি জানায়, ব্যতিক্রম এই আয়োজন দেখতে দর্শনার্থী ও ভক্তরা ভিড় জমাচ্ছেন মন্দিরে। পূজায় সম্প্রীতির এমন নিদর্শনকে স্বাগত জানিয়েছেন সবাই। 

এই মণ্ডপে ঘুরতে আসা পাপিয়া চাকমা বলেন, ঐতিহ্যবাহী পোশাকে দেবীকে সাজানো হয়েছে শুনে দেখতে এসেছি। বেশ ভালো লাগছে। দেবীর গায়ে যে এমন পোশাক শোভা পাবে ভাবতেই পারিনি। আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাককে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিমা তৈরি করার জন্য। 

দর্শনার্থী শিউলি চৌধুরী বলেন, পোশাকে ভিন্নতা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আমারও বেশ ভালো লেগেছে। সবাইকে নিয়েই তো এই আয়োজন। পাহাড়ি পোশাকে দেবী দুর্গার সাজ সম্প্রীতির বার্তা বহন করে। 

দুর্গা মাতৃমন্দিরের পুরোহিত আশিষ ভট্টচার্য্য বলেন, মা সকলের। মায়ের কাছে কোনও ভেদাভেদ নেই। আমাদের পূজার আয়োজন সকলের মধ্যে পৌঁছে দিতে এবং সকলকে নিয়ে সহাবস্থানে থাকার লক্ষ্যে এবার আমাদের এই আয়োজন। সকলে এটি সাদরে গ্রহণ করেছে, এতে আমরা খুশি।

এবার তিথি অনুযায়ী মহানবমী ও দশমী পূজা একই দিন পড়েছে। মহানবমী পূজা শেষে দশমী তিথি আরম্ভ হয়ে যাওয়ায় আজই দশমী পূজা সম্পন্ন হবে। সকাল ৬টা ১২ মিনিটের মধ্যে দুর্গাদেবীর মহানবমী কল্পারম্ভ ও বিহিতপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সকাল ৮টা ২৬ মিনিটের মধ্যে দেবীদুর্গার দশমী বিহিতপূজা ও পূজান্তে দর্পণ বিসর্জন করা হবে। পূজা শেষে যথারীতি পুষ্পাঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও সন্ধ্যায় ভোগ আরতি থাকবে। এ উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনের পূজামণ্ডপে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে আরতি প্রতিযোগিতা।