সারা বাংলা

নোয়াখালীতে পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৩

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানায় গত ৫ আগস্ট হামলা, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের আদালতে তোলা হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নাইম হোসেন (২১) ইমাম হোসেন ইমন (২২) ও নাহিদুল ইসলাম (১৬)। তারা সবাই সোনাইমুড়ী উপজেলার বাসিন্দা।  

শনিবার (১২ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল্লাহ-আল-ফারুক। 

তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সোনাইমুড়ী উপজেলার বাইপাস এলাকা থেকে গত ৫ আগস্ট সোনইমুড়ী থানায় হামলা ও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আসামি নাইম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ কনস্টেবল মো. ইব্রাহীমকে হত্যার সাথে জড়িত আসামি ইমাম হোসেন ইমনের হেফাজত থেকে নিহত পুলিশ কনস্টেবলের ব্যবহৃত মোবাইল উদ্ধার করা হয় এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই সময় তার থেকে একটি টেকনো স্পার্ক মোবাইল জব্দ করা হয়। উক্ত মোবাইল ফোনে জনৈক ওমর ফারুক নামক আইডির ব্যক্তির কাছে পাঠানো ইমনের ঘটনার দিন পুলিশ হত্যার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক ভয়েস রেকর্ড পাওয়া যায়। এরপর হামলার ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে থেকে পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে হত্যার সাথে জড়িত নাহিদুল ইসলাকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।    পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃত নাহিদুল জিজ্ঞাসাবাদে জানায় আসামিরা গত ৫ আগস্ট সোনাইমুড়ী থানায় হামলা ও সংঘাতে জড়িত। বিভিন্ন সময়ে প্রত্যেকেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। সোনাইমুড়ী থানায় আক্রমণ পরবর্তীতে প্রাণ ভয়ে জীবন রক্ষার্থে পলায়নরত পুলিশদের পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে থানার পিছনে অপেক্ষা করে আসামিরা। পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ ইব্রাহিম নীল রংয়ের পুলিশের টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় সীমানা প্রাচীরের নীচ দিয়ে টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে বের হওয়ার সময় নাহিদুল ইসলাম তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বাধা দেয়। 

এরপর মারধর শুরু করে। সাথে সাথেই ইমাম হোসেন ইমন হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে আঘাত শুরু করে। কনস্টেবল ইব্রাহিম গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে অপর আসামিরা হত্যার উদ্দেশ্যে তার পুরো শরীরে আরো উপর্যুপরি আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় এবং নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও আসামি নাইম পুলিশ কনস্টেবল মোহাম্মদ ইব্রাহিমের পকেট থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল, আইডি কার্ড ও টাকাসহ মানিব্যাগ নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে পুনরায় আসামিরা এসে উপর্যুপরি আঘাত করে ইব্রাহিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে চার হাত পা ধরে ঝুলিয়ে রাস্তায় নিয়ে টানা হেঁচড়া করে সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত করে রেলক্রসিংয়ে কাছাকাছি রেখে উল্লাসে মত্ত হয়।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) আরও বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে পরিকল্পিত হত্যার বিষয়টি স্পষ্ট ও প্রাথমিকভাবে সাক্ষ্য প্রমাণ সম্বলিত। আদালতে আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।