গত বুধবার (৯ অক্টোবর) ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে শুরু হওয়া শারদীয় দুর্গোৎসব এখন শেষের পথে। আগামীকাল রোববার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনের এই উৎসব। শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকেই পার্বত্য জেলা রাঙামাটির প্রতিটি পূজা মণ্ডপে ভক্ত ও দর্শণার্থীদের ঢল নেমেছে। বাঙালিদের পাশাপাশি মণ্ডপগুলোতে ভিড় করছেন পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর নর-নারীরা। যা সম্প্রীতির এক অপূর্ব মেলবন্ধনে রূপ নিয়েছে।
রাঙামাটি জেলা শহরের সবচেয়ে বড় পূজা আয়োজন করা হয়েছে শ্রী শ্রী গীতাশ্রম মন্দিরে। আজ বিকেলে সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রচুর দর্শনার্থী গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন। ভেতরে ৪০০-৫০০ দর্শনার্থী দুর্গা দেবীর আরাধনা করছেন। এক গ্রুপ মন্দির থেকে বের হয়ে আসলে, আরেক গ্রুপ দেবীকে দেখার সুযোগ পাচ্ছিলেন। এসময় পাহাড়ি-বাঙালিরা একসঙ্গে মন্দিরে প্রবেশ করছিলেন।
কেল্লামুড়া থেকে স্ত্রীকে নিয়ে পূজা দেখতে আসা অরবিন্দ ত্রিপুরা বলেন, ‘অনেকেই পূজা কেন্দ্র করে কোনো সমস্যা হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন। দেখলাম কোথাও কোনো সমসা নেই। পাহাড়ি ও বাঙালিরা এক সঙ্গে দেবী দুর্গার আরাধনা করছেন। কেউ কারো সঙ্গে কোনো খারাপ ব্যবহার করেননি। বরং সবাই একে অন্যের সঙ্গে হাসি মুখে কথা বলেছেন। আমরা চাই, পার্বত্য জেলাগুলোতে সবাই যেনো মিলে মিশে থাকতে পারি।’
পূজা রায় বলেন, ‘পূজার দিনগুলো স্মৃতির ফ্রেমে বন্দি করে রাখতে মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেড়াচ্ছি। ছবি তুলছি।’
মগবান ইউনিয়ন থেকে পূজা দেখতে আসা ললিতা চাকমা বলেন, ‘প্রতিবছর পূজা দেখতে আসি। এবারও আসলাম। পূজার থিম দেখলাম, বেশ ভালো লাগছে। কোথাও কোনো সমস্যা নেই।
শ্রী শ্রী গীতাশ্রম দুর্গোৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি রাজু প্রসাদ দে বলেন, ‘আজ বিকেল থেকেই আমাদের মন্দিরে পাহাড়ি-বাঙালিদের ঢল নেমেছে। এভাবেই রাত ১২টা-১টা পর্যন্ত চলতে থাকে।’
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, প্রতিটি পূজা মণ্ডপে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। পুলিশ, আনসার ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। আশা করছি, সুন্দর ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব শেষ হবে।’