কেউ ভেলায়, কেউ ছোট নৌকায় অবার অনেকে সরাসরি জাল হাতে নিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলার আটকা ও চিলারং ইউনিয়নের শুক নদীর বুড়ি বাঁধ এলাকার জলকপাটে মাছ ধরার প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন।
গতকাল সোমবার বাঁধের পানি ছাড়া হলে সৌখিন শিকারিদের পাশাপাশি অসংখ্য জেলে মাছ শিকার শুরু করেন সেখানে। কম দামে পছন্দের দেশি মাছ কেনার উদ্দেশ্যে ঠাকুরগাঁও শহর থেকেও অসেন অনেকেই। মঙ্গলবারও (১৫ অক্টোবর) চলে মাছ ধরা উৎসব।
এদিকে, বাঁধের ছেড়ে দেওয়া পানিতে মাছ মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। তারা জানান, গতকাল সোমবার রাতে জাল ফেলেও কাঙ্খিত মাছ পাচ্ছেন না তারা। কারেন্ট জাল ও রিং জালের কারণে দেশীয় মাছ এখন বিলুপ্তির পথে।
আজ সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভোর থেকেই জাল, পলো এবং মাছ রাখার পাত্র খলই নিয়ে মাছ ধরতে শুরু করেছেন হাজারো মানুষ। এদের মধ্যে নারী-শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও ছিলেন। অনেকেই কোনো সরঞ্জাম ছাড়া খালি হাতে নেমে পড়েন মাছ শিকারে।
এদিকে, মাছ ধরা উৎসবকে ঘিরে বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় বসেছে খাবারের হোটেল, ফলের দোকান, খেলনা ও প্রসাধনীর দোকান। দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকদের মোটরসাইকেল ও সাইকেল রাখার জন্য তৈরি হয়েছে অস্থায়ী গ্যারেজও।
জানা যায়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ১৯৫১-৫২ সালের দিকে খড়া মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য একটি জলকপাট নির্মাণ করা হয়। জলকপাটে আটকে থাকা সেই পানিতে প্রতিবছর মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা ছাড়া হয়। পোনাগুলোর দেখভাল করে আকচা ও চিলারং ইউনিয়ন পরিষদ।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠাকুরগাঁওয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম যাকারিয়া জানান, ১৯৫১-৫২ সালের দিকে বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়। বাঁধটির সামনে একটি অভয়াশ্রম আছে। প্রতি বছর বাঁধটির পানি ছেড়ে দেওয়ার পরে মাছ ধরার জন্য এখানে অনেক মানুষের সমাগম ঘটে।