পঞ্চগড়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে অডিও কলে হুমকির অভিযোগে পঞ্চগড়-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে পঞ্চগড় সদর থানায় জিডিটি করেন পঞ্চগড় এম. আর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও পঞ্চগড়ের ছাত্র সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী। পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রঞ্জু আহম্মেদ সাধারণ ডায়েরি দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: অডিও কলে সমন্বয়ককে ধমকালেন সাবেক এমপি মুক্তা
জিডিতে ফজলে রাব্বী উল্লেখ করেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তা তার ফেসবুক আইডিতে উস্কানিমূলক এবং আক্রমণাত্মক পোস্ট করে আসছে শুরু থেকেই। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরও তিনি বর্তমান সরকার ও ছাত্রজনতার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস অব্যাহত রেখেছেন। তার একটি স্ট্যাটাসে মন্তব্য করায় গত ১৩ অক্টোবর ম্যাসেঞ্জারে অডিও কল দিয়ে ধমক ও হুমকি দেন।
রেকর্ডটিতে নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার ফেসবুকের ওয়ালে এসে তোমার বাহাদুরি কেন করতে হবে? আমি পঞ্চগড়েই আছি বেয়াদবি করবা না। আমার সাধারণ সৌজন্য শিষ্টাচার আছে বলেই মনোনয়ন পাবার পর আমাদের এলাকার সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ জমির উদ্দীন সরকারের (বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক স্পিকার) দোয়া নিতে গিয়েছিলাম। সাধারণ সৌজন্যতা বজায় রাখবা। রাজনীতি করতে চাও, রাজনীতিকে রাজনীতিকভাবে মোকাবেলা করবা, বেয়াদবি করবা না। বেয়াদবি করে কোনদিন রাজনীতিতে বড় হওয়া যায় না।’
ম্যাসেঞ্জার কলে তিনি ফজলে রাব্বীকে আরও বলেন, ‘আমার শিক্ষা, আমার রুচি, আমার ব্যাকগ্রাউন্ড এবং পঞ্চগড় নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা- সেটা অর্জন করতে তোমার বহু বছর লাগবে। আমি যতটুকু করছি জীবনে সেটুকু অর্জন করতে তোমার বহু বছর লাগবে। তোমরা মনে করো আমি লুকিয়ে আছি? তোমরা কী শুরু করেছ?’
ফজলে রাব্বী বলেন, ‘গত রোববার (১৩ অক্টোবর) আমি ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত ছিলাম। হঠাৎ ম্যাসেঞ্জারে সাবেক সংসদ সদস্যের কল দেখে কিছুটা অবাক হয়েই রিসিভ করলাম। তিনি যেভাবে কথা বলছিলেন, এর জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। তাই পুরো ফোন কলটি রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি। আমাকে দেখে নিতে পারার ক্ষমতাও তার আছে- বলেছেন।’
ফজলে রাব্বী আরো বলেন, ‘সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়া মুক্তা আন্দোলনের সময় থেকেই শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও ছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগের দিনও একটি স্ট্যাটাসে- রক্ত স্নানে শুদ্ধ হবার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আমরা এসব পরোয়া না করে, জীবন বাজি রেখে আন্দোলন করেছি। এখন তাকে ছাড় দিয়ে কথা বলবো কেন? তার হুমকির প্রেক্ষিতে আইনি সহায়তার জন্য জিডি করেছি, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে।’