সারা বাংলা

প্রেমের ‘অপরাধে’ কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে এক কিশোরকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার যুবকের নাম রাজু মিয়া (১৭)। সে উপজেলার শাল্টি গোপালপুর ইউনিয়নের দুর্গামতি গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে। 

সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজু মিয়া অভাবের সংসারে বাবার সঙ্গে কৃষিকাজে সহায়তা করে। প্রতিবেশী হাফিজুর রহমানের মেয়ের সঙ্গে সম্প্রতি তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে শনিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে নিজ বাড়ির সামনে থেকে ওই কিশোরকে ধরে নিয়ে যায় মেয়েটির বাড়ির লোকজন।

পরে তাকে বাড়ির আঙিনায় আমগাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। একপর্যায়ে এলাকার আবদুল খালেক, করিম মিয়া, রবিউল, সেহেরুলসহ ১৫-২০ জন তাকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে অসুস্থ অবস্থায় রাজুকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে কারাগারে পাঠায়।

রাজুর দাদি রেজিয়া বেওয়া (৮০) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘মোর নাতিক আনি দ্যাও। বিনা দোষে ওরা ছইলট্যাক গরুর মতোন ডাংগাইলো।’ 

স্থানীয় বাসিন্দা রানা বেগম, বুলবুল মিয়া, আবদুল লতিব, মাহফুজা বেগম ও গাউছুল আযম জানান, ছেলেটার কোনো দোষ নাই। মেয়েটার সঙ্গে তার ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। এই ভালোবাসার অপরাধে তাকে ধরে নিয়ে তারা বেদম মারধর করেছে। হাফিজুর গায়ের জোরে লোকজন ভাড়া করে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন চালিয়েছে।’ 

মেয়ের বাবা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মেয়েকে বারবার বিরক্ত করে আসছে রাজু। তাই তাকে ধরে একটু শাসন করা হয়েছে।’ 

মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, ‘ছেলেটিকে মারধর করা ঠিক হয়নি। তাকে রক্ষার জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে ১৫১ ধরায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।