ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে চলছে অবাধে মা ইলিশ নিধন। নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই জেলেরা নদী থেকে মাছ ধরছেন। মৎস্য অধিদপ্তর যে ট্রলারের মাধ্যমে নদীতে অভিযান পরিচালনা করছে, সেই ট্রলারের চালকদের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে মাছ ধরতে সহযোগিতা করার অভিযোগ করেছেন জেলেরা।
মঙ্গলবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে দেখা গেছে, সুগন্ধা নদীতে অসংখ্য ডিঙ্গি নৌকা ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলার দিয়ে মাছ ধরছেন জেলেরা।
জেলেরা জানান, ইলিশ রক্ষা অভিযান দলের ট্রলার চালকদের ম্যানেজ করেই মাছ নিধন করছেন তারা। প্রশাসনের অভিযানে নামার খবর জেলেদের কাছে পৌঁছে দেন ট্রলার চলকরা। ফলে জেলেরা সর্তক হয়ে যান। মৎস্য বিভাগ অভিযান শেষে করলে পুনরায় নদীতে জাল নিয়ে নামেন তারা।
নলছিটি উপজেলার কুলকাঠি ইউনিয়নের সরই এলাকার জেলে রায়হান হাওলাদার ও মনির খান জানান, প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগের একাধিক টিম নদীতে অভিযান চালায়। এসব অভিযানে দ্রুত গতির ট্রলার ও স্পিডবোট ব্যবহার করা হয়। ট্রলারের যারা মাঝি থাকেন, তারাই জেলেদের কাছে অভিযানের সংবাদ পৌঁছে দেন। এমনকি অভিযানে থাকা মাঝিরা ইলিশ ধরা এবং বিক্রির সঙ্গেও জড়িত রয়েছেন। তাদেরই একজন নলছিটি মৎস্য অধিদপ্তরের ট্রলার চালক গৌতম ও ঝালকাঠি মৎস্য বিভাগের ট্রলার চালক সুমন মাঝি। তাদের ট্রলার নিয়ে মৎস্য কর্মকর্তা অভিযানে নামেন।
জেলেদের অভিযোগ, গৌতম ও সুমন টাকা নিয়ে মৎস্য বিভাগের অভিযানে নামার সংবাদ জেলেদের কাছে পৌঁছে দেন। গৌতম ইলিশ মাছ বিক্রির সঙ্গেও জড়িত রয়েছে।
ট্রলার চালক গৌতম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে মৎস্য কর্মকর্তারা থাকেন। আমরা জেলেদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে খবর দেই না। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।’
ট্রলার চালক সুমন বলেন, ‘ আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই। আমাদের মধ্যে কোনো ভেজাল নেই। জেলেদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া প্রশ্নই ওঠে না।'
নলছিটি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রমনী কুমার মিস্ত্রি বলেন, ‘অভিযানে নামলে কারো মোবাইলে কল করার সুযোগ থাকে না।’
পাঁচ বছর অভিযানে একই ট্রলার চালক রাখা হয়েছে কেনো এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘গৌতমের ট্রলারের গতি বেশি হওয়ার কারণে তাকেই নেওয়া হয়।’
ঝালকাঠি জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ট্রলার চালকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তাদের বাদ দেওয়া হবে।’