ফরিদপুরে গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত বাসচালক সামচু মোল্লার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর শহরের আলীপুর কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
লাশ উত্তোলনের সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, কর্মকর্তাবৃন্দ, পুলিশ ও নিহতের পরিবারের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২১ আগস্ট বাসচালক শামসু মোল্লা নিহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ৩০০ থেকে ৪০০ নেতাকর্মীকে আসামি করে নিহতের স্ত্রী মেঘলা বেগম বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তন্ময় ইসলাম জানান, গত ১২ সেপ্টেম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নিহত সামচু মোল্লার লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের আদেশ দেন। সেই আদেশের প্রেক্ষিতে সামচু মোল্লার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নিহত সামচু মোল্লার ছেলে মাহমুদুল ইসলাম রাজু জানান, গত ৫ আগস্ট বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় শহরের থানার মোড়ে তার বাবা পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নিহত শামচু মোল্লার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ফরিদপুর শহরের কোতয়ালী থানার মোড়ে বিকেল পাঁচটার দিকে একদল মানুষ ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা ঘেরাও করতে যান। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও গুলি ছোঁড়ে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে বাদামপট্টি এলাকায় গুলিতে নিহত হন পথচারী শামসু মোল্লা।
নিহত শামসু মোল্লা ফরিদপুরের করিম গ্রুপের মালিকানাধীন গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাসচালক ছিলেন। তিনি শহরের পূর্ব খাবাসপুর এলাকার বাসিন্দা মৃত মোবারক মোল্লার ছেলে। এ ঘটনায় তার দ্বিতীয় স্ত্রী মেঘলা বেগম গত ২১ আগস্ট বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।