সারা বাংলা

ইলিশের হাট ভাঙলো প্রশাসন, ১০ জনের জেল-জরিমানা 

ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুত ও বিক্রি বন্ধ রাখার নির্দেশনা রয়েছে প্রশাসনের। সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। শুক্রবার দেশের দুই জেলায় অভিযান চালিয়ে পদ্মানদীর পাড়ে অস্থায়ী ইলিশের হাট ভেঙে দেওয়াসহ ইলিশ উদ্ধার এবং ১০ জনকে জেল-জরিমানা করা হয়েছে। 

মাদারীপুর মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মাপাড়ের ইলিশের হাটে অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও প্রশাসনের দল। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের কাজিরসূরা এলাকায় নিষিদ্ধ মৌসুমে গড়ে ওঠা ইলিশের হাটে এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় হাটের অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় হাট। উদ্ধার করা হয় ৮০ হাজার মিটার জাল এবং ৬০ কেজি ইলিশ মাছ।

শিবচর উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এক শ্রেণির অসাধু জেলেরা পদ্মায় ইলিশ শিকার করে। পদ্মার পাড়েই এ মাছ বিক্রি করা হয়। মাছ বিক্রির জন্য পদ্মার পাড়ে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী হাটও। 

নদীতে অভিযানের পাশাপাশি শুক্রবার বিকেলে সেনাবাহিনী, পুলিশ, মৎস্য অফিস ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)-সহ যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় হাটের সকল অস্থায়ী স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়। সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাছ বিক্রেতা ও ক্রেতারা দ্রুত সরে পড়েন। 

মৎস্য অফিস সূত্র আরও জানিয়েছে, গত ১৩ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত ১১ দিনে পদ্মানদীতে ৩৭টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় ৬ লাখ ৭০ হাজার মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ করেন। আটক করা হয় ৪০ জেলেকে। এদের মধ্যে ১৪ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া ২০ জনকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ৬ জনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। জব্দ করা হয় ১৩টি ট্রলার। উদ্ধার করা হয় ৩১০ কেজি ইলিশ।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদৌস ইবনে রহিম জানান, শুক্রবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য অফিস, পু্লিশ এবং সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে অস্থায়ী ইলিশের হাটে অভিযান চালানো হয়েছে। হাটটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া নদীতে নিয়মিত অভিযান চলমান আছে।

মানিকগঞ্জ মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় পদ্মা-যমুনা নদীর বিভিন্ন এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার ও বিক্রির অপরাধে ১০ জনকে জেল-জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শিবালয় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম ফয়েজ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দণ্ডিতদের বাড়ি শিবালয় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।

শিবালয় উপজেলা প্রশাসন জানায়, শুক্রবার ভোরে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে শিবালয়ের পদ্মা-যমুনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ আহরণ করায় ৪ জনকে ১২দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ইলিশ বিক্রির অপরাধে ৬ জনকে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। 

এ ছাড়া অভিযানে প্রায় দুই মণ ইলিশ ও প্রায় ৩ লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া মাছ স্থানীয় এতিমখানায় বিরতণ করা হয়েছে এবং কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।

শিবালয় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস.এম ফয়েজ উদ্দিন জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যারা ইলিশ আহরণ করবে এবং যারা বিক্রয় ও ক্রয় করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তা ছাড়া মা ইলিশ সংরক্ষণে আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত নিয়মিত অভিযান চলবে। অভিযানে আসনার বাহিনীর সদস্যরা সার্বিক সহযোগীতা করেছেন বলেও তিনি জানান।