ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাবেক দুই মন্ত্রী ও আট এমপিসহ ২৪০ জনকে আসামি করে নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়েছে। এই প্রথম কোনো মামলায় জেলার সকল সাবেক সংসদ সদস্য সদস্যকে আসামি করা হলো।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জেলা শহরের শেরপুরের বাসিন্দা আনিছুর রহমান বাদি হয়ে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এই মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবেক গণপূর্ত ও গৃহায়নমন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা ও আখাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ একে একরামুজ্জামান, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন;
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মঈন উদ্দিন, একই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান আলম সাজু ও জিয়াউল হক মৃধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান;
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি তাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ আলম, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল আলম ও মো. বিল্লাল মিয়া;
জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মো. হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, সাবেক পৌর মেয়র ও সহ-সভাপতি নায়ার কবির, গোলাম মহিউদ্দিন খাঁন, চিকিৎসক মো. আবু সাঈদ, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী;
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম খোকন, সাংগঠনিক শেখ মো. মহসিন ও তানজিল আহমেদ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক চিকিৎসক ডিউক চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিনারা আলম;
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক গণপূর্তমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী এম এ এইচ মাহবুব আলম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম রুবেল, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন প্রমুখ। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সারা বাংলাদেশে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের ক্যাডার বাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে বৈষম্যবিরোাধী ছাত্র জনতা ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনে একদফা ডাক দেয়।
গত ৪ আগস্ট সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টার দিকে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল নিয়ে শহরের ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে শহরের উদ্দেশ্যে রওনা করে।
মামলার আসামি সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য, সাবেক জনপ্রতিনিধিসহ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ প্ররোচনা ও হুকুমে অন্যান্য এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা ছাত্র জনতার আন্দোলনকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। তারা নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীদের উপর অন্যায়ভাবে হামলা চালায়। এতে অজ্ঞাতনামা অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়।
আসামিরা কয়েকশ’ ককটেল ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ করে অন্তত ১০ লাখ টাকার ক্ষতি করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন জানান, সাবেক দুই মন্ত্রী ও আট সংসদ সদস্যসহ ২৪০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।